পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বেতাল পঞ্চবিংশতি।
১৯১

পাতা, মূল ও ফলের প্রকার আছে। অনুবাদে বিশেষণ আছে; কিন্তু ফলাদির প্রকার নাই।

 “বাসুদেব-চরিতে"র ভাষা অপেক্ষা বেতালের ভাষা অধিকতর সংযমিত ও মার্জ্জিত। ভাষার একটু নমুনা এই -

 “উজ্জয়িনী নগরে গন্ধর্ব্বসেন নামে রাজা ছিলেন। তাঁহার চারি মহিষী। তাঁহাদের গর্ভে রাজার ছয় পুত্র জন্মে। রাজকুমারেরা সকলেই সুপণ্ডিত ও সর্ব্ব বিষয়ে বিচক্ষণ ছিলেন। কালক্রমে নৃপতির লোকান্তর প্রাপ্তি হইলে, সর্ব্বজ্যেষ্ঠ শঙ্কু সিংহাসনে অধিরোহণ করিলেন। তৎকনিষ্ঠ বিক্রমাদিত্য বিদ্যানুরাগ, নীতিপরতা ও শাস্ত্রানুশীলন দ্বারা সবিশেষ বিখ্যাত ছিলেন্ন; তথাপি, রাজ্যভোগের লোভসংবরণে অসমর্থ হইয়া, জ্যেষ্ঠের প্রাণসংহারপূর্ব্বক স্বয়ং রাজেশ্বর হইলেন; এবং ক্রমে ক্রমে নিজ বাহুবলে, লক্ষযোজনবিস্তীর্ণ জম্বুদ্বীপের অধীশ্বর হইয়া, আপন নামে অব্দ প্রচলিত করিলেন।”

 মাইকেলের অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রথমে যেমন সমাদৃত হয় নাই, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের “বেতাল"ও প্রথমে সেরূপ সমাদর পায় নাই। কেহ কেহ বলেন, শ্রীরামপুরের মিশনরীরা ইহার আদর প্রথম বাড়াইয়া দেন। অসম্ভবই বা কি? স্কটের “ওয়েভার্লি” প্রকাশিত হইবামাত্র সমাদৃত হয় নাই। তাহার সমাদর হইতে অনেক সময় লাগিয়াছিল। সেক্‌স্‌পিয়রের আদর তদীয় জীবিতকালে হয় নাই। জর্ম্মণ পণ্ডিতের গুণগ্রাহিতাগুণে তাঁহার প্রতিভার পরিচয় পাই; নহিলে সে প্রতিপত্তি প্রস্ফুটিত হইতে হয় তো আরও অনেক সময় লাগিত। মিল্‌টনের জীবদবস্থায় “প্যারাডাইস্‌ লস্টে"র প্রতিপত্তি ছিল না। এমন অনেক দৃষ্টান্ত