সম্বন্ধে যাহা লিখিত হইয়াছে, তাহা দেখিয়া বিস্ময়াপন্ন হইলাম। তিনি লিখিয়াছেন, “বিদ্যাসাগর প্রণীত বেতালপঞ্চবিংশতিতে অনেক নূতন ভাব ও অনেক সুমধুর বাক্য তর্কালঙ্কার দ্বারা অন্তর্নিবেশিত হইয়াছে। ইহা তর্কালঙ্কার দ্বারা এতদূর সংশোধিত ও পরিমার্জ্জিত হইয়াছিল যে, বোমাল্ট ও ফ্লেচরের লিখিত গ্রন্থগুলির ন্যায় ইহা উভয় বন্ধুর রচিত বলিলেও বলা যাইতে পারে।' এই কথা নিতান্ত অলীক ও অঙ্গত; আমার বিবেচনায় এরূপ অলীক ও অসঙ্গত কথা লিখিয়া প্রচার করা যোগেন্দ্রনাথ বাবুর নিতান্ত অন্যায় কার্য্য হইয়াছে।
এতদ্বিষয়ের প্রকৃত বৃত্তান্ত এই— আপনি, বেতালপঞ্চবিংশতি রচনা করিয়া, আমাকে ও মদনমোহন তর্কালঙ্কারকে শুনাইয়াছিলেন। শ্রবণকালে আমরা মধ্যে মধ্যে স্ব স্ব অভিপ্রায় ব্যক্ত করিতাম। তদনুসারে স্থানে স্থানে দুই একটী শব্দপরিবর্ত্তিত হইত। বেতালপঞ্চবিংশতি বিষয়ে, আমার অথবা তর্কালঙ্কারের এতদতিরিক্ত কোন সংস্রব বা সাহায্য ছিল না।
আমার এই পত্রখানি মুদ্রিত করা যদি আবশ্যক বোধ হয় করিবেন, তদ্বিষয়ে আমার সম্পূর্ণ সম্মতি ইতি।
|
কলিকাতা। |
সোদরাভিমানিনঃ |
পণ্ডিত যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ নাকি পণ্ডিতপ্রবর তারানাথতর্কবাচস্পতি মহাশয়ের নিকট উহা শুনিয়াছিলেন। যখন এই পত্র লেখালিখি হয়, তখন বাচস্পতি মহাশয় জীবিত ছিলেন না। প্রথমাবস্থায় সকলকেই যে একটুকু অধিক সতর্ক, কিঞ্চিৎ কুণ্ঠিত থাকিতে হয়, এই ঘটনায় তাহা সপ্রমাণ হইতেছে।