পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগর।
৪৫১

ছিল। এলোপ্যাথিক চিকিৎসা হার মানিয়াছিল। ইহাতে হোমিওপ্যাথিকের উপর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অধিকতর ভক্তি হইয়াছিল। তিনি এই সময় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা-বিদ্যা শিক্ষা করিবার জন্য পুর্ব্বাপেক্ষা অধিকতর যত্নশীল হন। শববিচ্ছেদ শিক্ষা ভিন্ন চিকিৎসাবিদ্যা ব্যর্থ হয় বলিয়া, তিনি কতকগুলি নরকঙ্কাল ক্রয় করিয়াছিলেন। সুকিয়া স্ট্রীটনিবাসী ডাক্তার চন্দ্রমোহন ঘোষ তাঁহাকে এতদ্বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় পরে এই সব নরকঙ্কাল রাজকৃষ্ণ বাবুর পুত্রকে দিয়াছিলেন। এই সময় তিনি বহুসংখ্যক হোমিওপ্যাথিক পুস্তক ক্রয় করিয়াছিলেন। এই সব পুস্তক তাঁহার লাইব্রেরীতে আছে। এই লাইব্রেরীতে হোমিওপ্যাথিক পুস্তক ব্যতীত প্রায় লক্ষাধিক টাকার অন্য পুস্তক আছে। তেমন সুন্দর বিলাতী বাঁধান পুস্তক আর কোন পুস্তকালয়ে আছে কি না সন্দেহ। পুস্তকালয় তাঁহার জীবনাবলম্বন বলিলেও বোধ হয় অত্যুক্তি হয় না। অধ্যয়ন তাঁহার জীবনের ব্রত ছিল। এক মুহূর্ত তিনি পুস্তক ব্যতীত থাকিতেন না। এমন কি একবার তাঁহার প্রিয়পাত্র স্নেহভাজন শ্রীযুক্ত নীলাম্বর মুখোপাধ্যায় মহাশয় ভারতবর্ষের ইতিহাস লিখিবেন বলিয়া তাঁহার নিকট হইতে কতকগুলি পুস্তক চাহেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহাকে লাইব্রেরীর পুস্তক না দিয়া নূতন পুস্তক কিনিয়া আনিয়া দেন।[১] একবার তাঁহার একটী ধনাঢ্য বন্ধু লাইব্রেরীর বাঁধান পুস্তক দেখিয়া বলিয়াছিলেন, —“আপনি পাগল।


  1. এই কথাটী ডাক্তার ৺অমূল্যচরণ বসু মহাশয়ের নিকট শুনিয়াছি।