পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৫৪
বিদ্যাসাগর।

আচার ব্যবহারের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করায় রামমোহন তাহাদিগের বিরাগভাজন হইলেন এবং নানাপ্রকার অত্যাচার উৎপীড়ন সহ্য করিয়া পুনরায় স্বদেশে প্রত্যাগমন করিলেন। ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দে পিতার মৃত্যু হইলে তিন সহোদরে পৈতৃক সম্পত্তি বিভাগ করিয়া লইয়া রামমোহন সংসারী হইলেন। কিন্তু বিষয়ের আয় হইতে ব্যয় নির্ব্বাহ হওয়া সম্ভবপর নয় দেখিয়া ইনি চাকরী অন্বেষণে বহির্গত হইলেন এবং রঙ্গপুরে কালেক্টারী অফিসে সামান্য বেতনে একটী কর্ম্ম পাইলেন; নিজ কার্য্যদক্ষতায় অতি অল্পদিনের মধ্যে ইনি সেরেস্তাদারের পদে উন্নীত হইলেন। এই সময়ে ইনি প্রভূত পরিশ্রম করিয়া ইংরেজী ভাষায় জ্ঞানলাভ করেন। কিছুদিন পর ইঁহার অগ্রজদ্বয়ের মৃত্যু হওয়ায় এবং তাঁহাদের সন্তানাদি না থাকায় রামমোহন সমস্ত পৈতৃক বিষয়ের অধিকারী হইলেন। এইরূপে গ্রাসাচ্ছাদনের চিন্তা হইতে মুক্ত হইয়া ইনি রাজকার্য্য হইতে অবসর গ্রহণ করিলেন এবং কিঞ্চিৎকাল মুর্শিদাবাদে অবস্থিতি করার পর ৪০ বৎসর বয়ঃক্রম কালে কলিকাতায় আসিয়া বাস করিলেন।

 অতঃপর রামমোহন অনন্যচিত্ত ও অনন্যকর্ম্মা হইয়া ধর্ম্মালোচনায় প্রবৃত্ত হইলেন এবং ১৮২৭ খৃষ্টাব্দে কলিকাতায় ব্রাহ্মসমাজ সংস্থাপন করিলেন। কেবল তাহাই নহে, ইনি পূর্ব্বে যে সকল ভাষা শিক্ষা করিয়াছিলেন, তদ্ভিন্ন উর্দ্দু, হিব্রূ, ফরাসী, গ্রীক এবং ল্যাটিন ভাষাতেও অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছিলেন। এক্ষণে ইনি ইংরেজী প্রভৃতি ঐ সমস্ত ভাষা হইতে ধর্ম্ম-সম্বন্ধীয় প্রবন্ধ সকল সঙ্কলন করিয়া বাঙ্গালা গদ্যে প্রকাশ করিতে লাগিলেন। বলিতে গেলে ইনিই প্রথম মার্জ্জিত বাঙ্গালা গদ্য লেখক, উত্তরকালীন লেখকগণ তাঁহারাই ভাষা অনুকরণ করিয়াছেন ___ হউক, এইরূপ-