পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন-কথা।
৬৬৫

কৈলাস চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। হেমচন্দ্র বাল্যকালে গ্রাম্য-পাঠশালায় গুরুমহাশয়ের নিকট তৎকাল-প্রচলিত শিক্ষা লাভ করেন। পরে বিংশতি বর্ষ বয়ঃক্রমকালে খিদিরপুরে আসিয়া হিন্দুকলেজে প্রবিষ্ট হন ও তৎপরে উক্ত বিদ্যালয় প্রেসিডেন্সি কলেজে পরিণত হইলে তাহাতেও অধ্যয়ন করেন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় ইনি বৃত্তিসহ উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন।

 কিছু দিন পরে হেমচন্দ্রকে বিদ্যালয় পরিত্যাগ করিয়া বিষয়কর্ম্মে প্রবিষ্ট হইতে হয়। সেই সময় ইনি বি, এ, ও বি, এল্ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অনন্তর কিছুদিন মুন্‌সেফের পদে কার্য্য করিয়া ১৮৬২ খৃষ্টাব্দে কলিকাতার হাইকোর্টে ওকালতী করিতে আরম্ভ করেন। এই কার্য্যে বিদ্যা, বুদ্ধি, সাধুতা, বিচক্ষণতা ও কার্য্যকুশলতার পরিচয় প্রদান করিয়া বিলক্ষণ যশস্বী হইয়াছিলেন এবং যথেষ্ট অর্থ উপার্জ্জন করিয়াছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত মুক্তহস্ত হওয়ায় কিছুই সঞ্চয় করিতে পারেন নাই। শেষ দশায় অন্ধ হইয়া ইনি বিশেষ কষ্ট পাইয়াছিলেন। এমন কি ইঁহাকে অন্যের অর্থ সাহায্যের উপর নির্ভর করিতে হইয়াছিল। অতঃপর ইনি ভবযন্ত্রণা হইতে অব্যাহতি লাভ করেন।

 হেমচন্দ্র একজন স্বভাব কবি। ইনি মধুসূদনের মেঘনাদ বধ কাব্যের টীকা রচনা ও সমালোচনা করিয়া স্বকীয় বিদ্যাবুদ্ধি ও কাব্যপ্রিয়তার প্রকৃষ্ট পরিচয় প্রদান করেন। মধুসূদনের পর ইনি কাব্যোচ্ছ্বাসে বঙ্গবাসীকে মোহিত করিয়াছিলেন। ইঁহার নূতন নূতন ছন্দোবন্ধে ও সুললিত ভাষায় বঙ্গীয় পাঠকগণ যেন মন্ত্রমুগ্ধ হইয়া পড়িত। মধুসূদনের অকাল মৃত্যুতে বঙ্গীয় কবি সিংহাসন শূন্য ___ গুণগ্রাহী বঙ্কিমচন্দ্র ইঁহাকে সেই সিংহাসনে