পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সময় চন্দননগরেও সেবক সঙ্ঘ সংগঠিত হল কিন্তু দুঃখের বিষয় সেবার কানাইলাল ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কাজ করতে পারলেন না। এই ম্যালেরিয়া জ্বর ছিল তাঁর জয়যাত্রা পথের কণ্টক স্বরূপ। প্রায়ই তিনি ম্যালেরিয়ায় ভুগতেন, তবে, জ্বরাক্রান্ত হলেও সাধ্যমত তিনি কাজ করতে চেষ্টা করতেন। দেখা গেছে তিনি জ্বরদেহেই একখানা চাদর গায়ে এবং একজোড়া ছোঁড়া মোজা পায়ে দিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। একবার কিন্তু তিনি সকলকে স্তম্ভিত করে দিলেন। তখন তাঁর জ্বর চলছে—১০৫” পর্যন্ত তাপ উঠছে। এই সময়ে চন্দননগরে ভীষণ এক অগ্নিকাণ্ড হয়। আগুন দেখে সকলে ছুটে এসে দেখে যে কানাইলাল সবার আগে সেই জ্বরদেহেই এসে হাজির হয়েছেন এবং ঘর্মাক্ত কলেবরে চালের ওপর উঠে অক্লান্ত ভাবে জল ঢেলে চলেছেন। একাদিক্রমে পাঁচ ছয় ঘণ্টা আগুনের সাথে লড়াই করে আগুন যখন অনেকটা নিভে এল তখন ক্লান্তদেহে কানাইলাল বসে পড়লেন। তারপর তাঁর বিশিষ্ট বন্ধু, সহকর্মী ও প্রবর্তক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা মতিলাল রায় ও অন্যান্য বন্ধুর কাঁধে ভর দিয়ে কোনগতিকে বাড়ী ফিরে গেলেন। দেশের ও দশের সেবা তাঁর হৃদয় এমনই আচ্ছন্ন করে রেখেছিল যে তার জন্য তিনি সব কিছুই ভুলে যেতে পারতেন। তার জন্য তাঁর কাছে কোন ত্যাগই যথেষ্ট ছিল না।

 এত কাজ করেও তাঁর ক্লান্তি ছিল না। তিনি যে ছাত্র, পড়াশোনা তাঁর যে অন্যতম প্রধান কর্তব্য সেদিকে তাঁর দৃষ্টি

২৩