পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৮১

তখনও একেবারে পরিত্যাগ করা হয় নাই এবং কতিপয় প্রসিদ্ধ কংগ্রেসকর্মী এই দিকে তাঁহাদের চেষ্টা চালাইতে থাকেন। ১৯৩৯ সালের ২৯শে জানুয়ারী কংগ্রেসের সভাপতি নির্ব্বাচনের পরে ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে কলিকাতায় আমূলপরিবর্ত্তনপন্থী ও বামপন্থী কংগ্রেস কর্মীদের এক ঘরোয়া বৈঠক হয়। বামপন্থী দল গঠনের প্রশ্ন পুনরায় নূতন করিয়া আলোচিত হয়, কিন্তু, এবারেও কয়েকজন প্রসিদ্ধ সমাজতন্ত্রী নেতা এরূপ নিরুৎসাহ করেন যে, বোধ হইয়াছিল যেন ব্লক গঠনের কোন চেষ্টাই ফলবতী হইবে না।

 কিন্তু তাহাতেও উদ্যোক্তারা দমিত হন নাই। ১৯৩৯ সালে এই উদ্দেশ্যেই ত্রিপুরীতে আর একটি ঘরোয়া বৈঠক হয়। যেহেতু কয়েকজন বিখ্যাত সমাজতন্ত্রী নেতা ইহার সহিত যুক্ত হইতে চাহেন নাই, কাজেই স্থির হয় যে, ‘Left Bloc’ নাম পরিবর্ত্তন করিয়া অপর একটি নামকরণ হইবে। কি কি কর্মপন্থা অনুসৃত হইবে ঘরোয়াভাবে তাহারও একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয় ও গৃহীত হয়। অতঃপর স্থির হয় যে পরবর্ত্তী নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সভায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে। যদিও প্রথম হইতেই আমি এই পরিকল্পনার পক্ষে ছিলাম তথাপি এই সময়ে আমার নিকট মনে হইয়াছিল যেন আমি নিজে ইহার সহিত যুক্ত না থাকিলেই উৎকৃষ্টরূপে দেশ সেবার কাজ করিতে পারিব। অবশ্য, সে ক্ষেত্রেও ইহার প্রতি আমার বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহানুভূতিশীল মনোভাবের কোন পরিবর্ত্তন হইবে না। পরিকল্পিত ‘Left Bloc' এর উদ্যোক্তারা সকলেই আমার সহিত একমত হইলেন।

 অবশেষে কলিকাতায় অনুষ্ঠিত এক ঘরোয়া বৈঠকে সর্ব্বসম্মতিক্রমে স্থির হয়, কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সমস্ত আমূল পরিবর্ত্তন-পন্থী ও প্রগতি-প্রবণ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী উপাদানগুলিকে ন্যূনতম কর্মপন্থার ভিত্তিতে সংহত ও সংঘবদ্ধ করিতে আর বিলম্ব করা উচিত নয়। এই ন্যূনতম