পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিয়াছিলেন। পিতার স্বাদেশিকতা ও তেজস্বিতা, মাতার ধর্ম্মপরায়ণতা ও পরদুঃখ কাতরতা সুভাষচন্দ্রের জীবন দেশপ্রেম ও ত্যাগ মাহাত্ম্যে অপূর্ব্ব মহিমামণ্ডিত করিয়া তুলিয়াছে।

 ইংরেজী ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দের ২৩শে জানুয়ারী বাঙ্‌লা ১৩০৩ সালের ১১ই মাঘ শনিবার দিবা অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটের সময় কটকে সুভাষচন্দ্রের জন্ম হয়। সুভাষচন্দ্র স্বর্গগত জানকী নাথ বসু মহাশয়ের ষষ্ঠ পুত্র। তাঁহার আট পুত্র ও ছয় কন্যার মধ্যে বর্ত্তমানে সাতজন পুত্র ও দুইটি মাত্র কন্যা জীবিত আছেন। জানকীনাথ সন্তানদের শিক্ষার জন্য প্রথম হইতেই বিশেষ যত্নবান ছিলেন। তাঁহারা প্রত্যেকেই যথোপযুক্ত শিক্ষা পাইয়াছিলেন। ছেলেরা প্রথমে কটকে ইউরোপীয় স্কুলে শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে প্রায় সকলেই ইউরোপে গিয়া উচ্চশিক্ষা প্রাপ্ত হন। ইহাদের মধ্যে শ্রীযুক্ত শরৎচন্দ্র বসু ব্যারিষ্টার এবং নেতা হিসাবে সকলেরই নিকট সুপরিচিত। দীর্ঘ কারাবাসের পর তিনি পুনরায় বাঙ্‌লার নেতৃত্বভার গ্রহণ করিয়াছেন। বর্ত্তমানে তিনিই বাঙলার একমাত্র অবিসংবাদী নেতা। ভাইদের মধ্যে শ্রদ্ধেয় শরৎচন্দ্র বসুই সুভাষচন্দ্রকে সমধিক ভালবাসিতেন। পরবর্ত্তী জীবনে কংগ্রেসদলপতিদের সহিত অনিবার্য্য কারণে সুভাষচন্দ্রের যখন বিবোধ উপস্থিত হয় তখন শরৎ বাবুই সুভাষচন্দ্রের পার্শ্বে দাঁড়াইয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র বসু ও ডাঃ সুনীল চন্দ্র বসুর নামও অনেকেই জানেন। সুভাষচন্দ্রের অনুজ শৈলেশচন্দ্র গত অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করিয়া কারাবরণ করেন। সুভাষচন্দ্রের সহিত তাঁহার আকৃতির আশ্চর্য্য সাদৃশ্য বিদ্যমান। এই সাদৃশ্য হেতু তাঁহাকে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হইতে হইয়াছে।