পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

মোটেই ছিল না। অথচ সকলের সঙ্গে মিশিয়াও তিনি সকলের একজন ছিলেন না। তিনি সর্ব্বদাই স্বকীয়তার এক দুর্ভেদ্য বর্ম্ম পরিয়া থাকিতেন। তাহা ভেদ করিয়া কেহই তাঁহার অন্তরলোকে প্রবেশ করিতে পারিত না। একান্ত কাছে থাকিয়াও তিনি যেন স্বকীয় গাম্ভীর্য্য ও ব্যক্তিত্বগৌরবে দূরে দূরেই থাকিতেন। তিনি সকলের কাছে ‘সুভাষবাবু’ বলিয়াই পরিচিত ছিলেন। কম লোকেই তাঁহাকে ‘সুভাষদা’ বলিয়া সম্বোধন করিতে সাহস করিত।

 ১৯২০ খৃষ্টাব্দে সুভাষচন্দ্র দেশের যুব সম্প্রদায় ও কৃষক-শ্রমিকদের মধ্যে সংযোগস্থাপনোদ্দেশ্যে “ইয়ং বেঙ্গল পার্টি” প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রমিকগণের আর্থিক অবস্থার উন্নতি বিধানের দিকে, এই বঙ্গীয় তরুণসঙ্ঘের বিশেষ দৃষ্টি ছিল। শ্রমিকগণ যাহাতে অতিরিক্ত পরিশ্রমের হাত হইতে অব্যাহতি পায়, যাহাতে তাহাদের বেতনের নিম্নতম হার নির্দ্ধারিত থাকে এবং তাহাদের অসুস্থতাকালীন বেতন লাভের ব্যবস্থা হয়, তজ্জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা তরুণ সঙ্ঘের উদ্দেশ্য ছিল। এতদ্ব্যতীত শ্রমিকগণ যাহাতে বৃদ্ধ বয়সে পেন্সন এবং দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ পায়, তাহার উপযুক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করাও এই দলের অভিপ্রেত ছিল। “Young Bengal Party”র অনুষ্ঠানপত্র হইতে দেখা যায়, পূর্ণ স্বাধীনতাই ভারতবাসীর লক্ষ্য বলিয়া সুভাষচন্দ্র সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। কৃষকগণকে অন্ততঃ নিম্নলিখিত অধিকারগুলি দেওয়া সুভাষচন্দ্রের মত ছিল।

 (ক) অন্যায় এবং বাজে আদায় বন্ধ করা।

 (খ) সুদের একটা উচ্চতম হার নির্দ্ধারণ করা।

 (গ) গাছ কাটা, ইঁদারা পুকুর কাটা এবং দালান ইমারত করার অবাধ অধিকার।

 (ঘ) হস্তান্তরের অবাধ ক্ষমতা।

 (ঙ) কৃষকের ভূমিতে স্বত্ব লাভ