পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
88
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

ভারতে বৃটিশ শাসনরক্ষার পক্ষে এতই বিপজ্জনক যে, বাঙ্‌লাদেশ হইতে নির্ব্বাসিত করিয়াও সরকার সন্তুষ্ট হইতে পারেন না, অথবা সমস্ত ব্যাপারটাই একটা বিরাট ধাপ্পাবাজি? যদি প্রথম কথা সত্য হয়, তাহা হইলে ব্যুরােক্রেশীর নিকট সেরূপ ভয়ের কারণ হওয়া আমার পক্ষে শ্লাঘার কথা। কিন্তু পরক্ষণেই যখন আমি আমার নিজের জীবন ও কার্য্যাবলীর কথা মনে মনে চিন্তা করি, তখন বুঝিতে পারি যে একদল স্বার্থান্ধ হিংসাপরায়ণ লােক আমাকে যে ভাবে দেখিতেছেন আমি প্রকৃত সেরূপ নহি। আমি বাঙ্‌লার বাহিরে কোন রাজনৈতিক কার্য্য করি নাই এবং ভবিষ্যতে করিব বলিয়াও মনে করি না; কারণ, বাঙ্‌লাকেই আমি আমার কার্য্যক্ষেত্র ও আদর্শের পক্ষে বিরাট বলিয়া মনে করি। বাঙ্‌লা সরকার ছাড়া অন্যকোন সরকারের আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযােগ আছে বলিয়া আমার মনে হয় না। ছয় বৎসরের মধ্যে আমি কংগ্রেসে যােগদান ও পারিবারিক কারণব্যতীত অন্য কোনও কার্য্যে বাঙ্‌লার বাহিরে যাই নাই। তবে কেন আমাকে সমস্ত ভারত, ব্রহ্মদেশ ও সিংহলে প্রবেশ করিতে নিষেধ করা হইতেছে? সিংহল খাস বৃটিশ উপনিবেশ। ভারত সরকারের নিষেধ আজ্ঞা আইন অনুসারে তথায় খাটিবে কি না সন্দেহ।

 বাঙ্‌লা সরকার এখন আমার গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত করিতে চাহেন। আমি যখন স্বাধীন ছিলাম, তখনই বা আমার কি গতিবিধি ছিল? ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর হইতে ১৯২৫ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর পর্য্যন্ত একবৎসরের মধ্যে আমি মাত্র দুইবার কলিকাতার বাহিরে গিয়াছিলাম। প্রথম খুলনা জেলা কনফারেন্সে যােগদান করিবার জন্য এবং দ্বিতীয় নদীয়া জিলার কাউন্সিল নির্ব্বাচনে একজন সভ্যপদ প্রার্থীর পক্ষে বক্তৃতা করিবার জন্য। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারী হইতে অক্টোবরের মধ্যে আমি একবারও কলিকাতার বাহিরে যাই নাই। আমাকে সিরাজগঞ্জ কনফারেন্সের সহিত জড়াইবার নানারূপ চেষ্টা হইয়াছে বটে, কিন্তু সে কনফারেন্সের সময় আমি কলিকাতা কর্পোরেশনের