পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

პა \Sბ8 বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ করিল, এবার আশামী “আইন অনুসারে।” খালাস পাইল না। জমীদার মহাশয় এক্ষণে শ্ৰীঘরে বাস করিতেছেন। সৰ্ব্বাপেক্ষা নিম্নলিখিত “হাস্পাতালির” বৃত্তান্তটি কৌতুকাবহ। সৰ্ব্বডিবিজনের হাকিমেরা স্কুল, ডিস্পেন্সরি করিতে বড় মজবুত। ১৪ পরগণার কোন আসিষ্টাণ্ট মাজিষ্ট্রেট স্বীয় সবৃডিবিজনে একটি ডিস্পেন্সরি করিবার জন্য তৎপ্ৰদেশীয় জমীদারগণকে ডাকাইয়া সভা করিলেন । সকলে কিছু কিছু মাসিক চাদ দিতে স্বীকৃত হইয়া গেলেন। একজন বাট গিয়া হুকুম প্রচার করিলেন যে, “আমাকে মাসে মাসে এত টাকা হাস্পাতালের জন্য চাদ দিতে হইবে, অতএব আজি হইতে প্ৰজাদিগের নিকট টাকায় /o আন হাস্পাতালি আদায় করিতে থাকিবে ।” গোমস্তারা তদ্রুপ আদায় করিতে লাগিল । এ দিকে ডিস্পেন্সারির সকল মোগাড় হইয়া উঠিল না—তাহা সংস্থাপিত হইল না । সুতরাং ঐ জমীদারকে কখন এক পয়সা র্চ্যাদা দিতে হইল না । কিন্তু প্ৰজাদিগের নিকট চিরকাল টাকায় এক আনা হাস্পাতালি আদায় হইতে লাগিল । কয়েক বৎসর পরে জমীদার ঐ প্রজাদিগের খাজানার হার বাড়াই বালি জন্য ১৮৫ সালের দশ আইনের নালিশ করিলেন । প্ৰজারা জবাব দিল যে, “আমরা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় হইতে এক হারে খাজানা দিয়া আসিতেছি-কখন হার বাড়ে কমে নাই-সুতরাং আমাদিগের খাজান বাড়িতে পারে না।” জমিদার তাহার প্রতুস্তুর এই দিলেন যে, উহারা অমুক সান হইতে হাস্পাতালি বলিয়া /০ খাজানা বেশী দিয়া আসিতেছে। সেই হেতুতে আমি খাজান বৃদ্ধি করিতে চাই। এক্ষণে জমীদারদিগের পক্ষে কয়েকটি কথা বলিবার প্রয়োজন আছে । প্রথমতঃ, আমরা পুর্বেই বলিয়াছি যে, সকল জমাদার অত্যাচারী নহেন । দিন দিন অত্যাচারপরায়ণ জমীদারের সংখ্যা কমিতেছে। কলিকাতাস্থ সুশিক্ষিত ভূস্বামীদিগের কোন অত্যাচার নাই—যাহা আছে, তাহা তাহাদিগের অজ্ঞাতে এবং অভিমতবিরুদ্ধে, নায়েব গোমস্তাগণের দ্বারায় হয়। মফঃসলেও অনেক সুশিক্ষিত জনীদার আছেন, র্তাহাদিগেরও প্রায় ঐ রূপ। বড় বড় জমাদারদিগের অত্যাচার তত অধিক লাহে ;- অনেক বড় বড় ঘরে অত্যাচার একবারে নাই । সামান্য সা:ান্য ঘরেই অত্যাচার অধিক । যাহার জমীদারী হইতে লক্ষ টাকা আইসে-অধৰ্ম্মাচরণ করিয়া প্ৰজাদিগের নিকট তার ২৫ হাজার টাকা লইবার জন্য তঁহার মনে প্ৰবৃত্তি জুৰ্ব্বল হইবারই সম্ভাবনা, কিন্তু র্যাহার জমীদারী হইতে বার মাসে বার শত টাকা আসে না, অথচ জমীদারী চাল চলনে চলিতে হইবে, মারপিট কারিয়া আর কিছু সংগ্ৰহ করিবার ইচ্ছা তঁহাতে সুতরাং বলবতী হইবে। আবার র্যাহারা নিজে জমীদার, আপন প্রজার নিকট খাজানা আদায় করেন, তঁহাদের