পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশের হিন্দুর অবস্থান্তর উপায়। ଈଳିତ কেবল বড় লোকের কন্যার বিকাহের সময় ইহাদের অধিক মূল্য পাইবার সম্ভাবনা দেখা যায়। r যে পন্থা আমরা অনুসরণ করিয়াছি, তাহারই ফলে গতিকে আমরা পল্লীত্যাগ করিয়াছি। অতএব পল্লীর ধন হইতে বঞ্চিত হইয়াছি। ‘বাগানে তরকারি দিয়া যাহা বিনামূল্যে পাইতাম, পুষ্করিণীতে মৎস্য ছাড়িয়া যাহা ছিপে ধরিতাম, নারিকেল তাল যাহা পয়সা দিয়া কিনি নাই, গৃহের গোধন যাহার খাটি দুগ্ধ হইতে ক্ষীর সর নবনীত খাইয়া মস্তিষ্কের বলাধান হইত ; আজ সেইগুলি পরিশ্রমের বিনিময়ে লব্ধ ধন নাশ করিয়া ক্ৰয় করিতেছি। পল্লী ত্যাগ করিয়াছি বলিয়া নিম্ন শ্রেণীর হিন্দুর প্ৰেতাত্মা শ্মশান হইতে বলিয়া দিতেছে “যে অর্থের নিমিত্ত দেশ ত্যাগ করিয়াছ, তাহার অধিকাংশ না দিলে আর পূর্বের মত খাদ্য সামগ্ৰী পাইবে না।” বাবুরা যখন পল্লীতে থাকিতেন। কৃষক ধান্যের সহিত তরিতরকারী উৎপন্ন করিয়া লাভবান হইত। এখন সেই লাভ হইতে বঞ্চিত হইয়া কেবল ধান্যে সংসার যাত্ৰা নির্বাহ করিতে তাহারা অক্ষম। তাই সে আজ বিদেশী বণিকের ক্রয়সামর্থ্য প্রার্থনা করিাতেছে-নচেৎ ইহার উপর চাউলের মূল্য কমিলে তাহাকে চাউলের ব্যবসায়ে ইস্তফা দিতে হইবে । কি অদ্ভুত নিয়ম ! দেখিতে দেখিতে অর্থের মূল্য হ্রাস হইয়া গেল, আর পূর্বের অর্থে পূর্বের মত সামগ্ৰী পাওয়া যাইবে না। বিক্রয়যোগ্য দ্রব্যের বিনিময়ে যে অর্থ প্ৰাপ্ত হওয়া যায়, উহাদ্বারাই ঐদ্রব্যের মূল্যজ্ঞাপন করা হয়, অতএব অর্থের মূল্যজ্ঞাপন করিতে বিষম সমস্যায় পড়িতে হয় ; যেহেতু অর্থই মূল্যজ্ঞাপক এবং ইহার পণ নিরূপণকারী মধ্যস্থ কোন কিছুই নাই। সাধারণতঃ দ্ৰব্য-সম্ভারের পণের তারতম্যানুসারে অর্থের মুল্য নিরূপণ করা যাইতে পারে ; কারণ দ্রব্যের সহিত দ্রব্যের সম্বন্ধই উহার মূল্য। এবং অর্থও যখন ধাতুজ পণ্যদ্রব্য