পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধনভোগ । እS ዓ অন্য দেশকে শর্করা না যোগাইয়া নিজেই জাৰ্ম্মণীর চিনি ব্যবহার করিতেছে। অন্যান্য বস্তু অল্প পরিমাণে ভোগ করিলে ক্ষতি হয় না, কিন্তু আহারীয় দ্রব্য সামগ্ৰী অল্প পরিমাণে ভোগ করিলে উদর যে পরিমাণে অল্প পূর্ণ হয়, সেই পরিমাণে বল কম হইয়া থাকে । এই জন্য দ্বিগুণ মহাৰ্ঘ সামগ্রীর অৰ্দ্ধেক না খাইয়া সস্ত। সামগ্ৰী অধিক খাওয়া ধনবিজ্ঞানসন্মত। আর একটা কথা, এদেশে ধান্যের পরিবৰ্ত্তে পাটের চাষ করিলে দেশের অপেক্ষাকৃত অধিক ধনাগম হয় অর্থাৎ সমপরিমাণ ভূমির উৎপন্ন ধান্য অপেক্ষা উৎপন্ন পাটের অধিক পরিমাণ সামগ্ৰী ক্রয় করিবার ক্ষমতা হয়। এই অধিক ধনে, দেশীয় চাউল দুমূল্য হইলে বঙ্গবাসী বিদেশ হইতে সুলভ মূল্যের অপেক্ষাকৃত অধিক পরিমাণ চাউল আনাইয়া ব্যবহার করিতে পারে ; তাতাতে দেশের ধন নাশ হয় না । তবে এই পাটের অধিক অর্থে আবশ্যক সামগ্ৰী ভোগ না করিয়া অল্পকাল-ভোগসাধ্য সামগ্ৰী ব্যবহার করিলে ক্লাসকের অবস্থার পরিবাৰ্ত্তন হয় না । ভারতবর্ষে অল্পকালস্থায়ী সামগ্রীর ব্যবহার কখনই ছিল না । এদেশের তৈজসপত্র বহুকালস্থায়ী ও গৃহস্থের ধন বিশেষ । ইয়ুরোপের কাচের বাসন অতীব ভঙ্গুর । এদেশের কার্পেট বা কাশার পিতলের বাসন, বা কাশ্মীরের শাল বহুকালস্থায়ী ও দেখিতে সুন্দর বলিয়। ইয়ুরোপীয়গণ সখের জন্য স্বদেশে লইয়া যান । এই সখের সামগ্ৰী ইহাদের ধনসম্পত্তিরূপে গণ্য, কারণ বহুকাল ব্যবহারের পর বিক্রয় করিলে অনেক সময় তিন ভাগ টাকা উঠিয়া আইসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ঐ রূপ দীর্ঘকালস্থায়ী পরম ব্যবহারোপযোগী ধন সামগ্রীর ভোগ করা ভারতবাসী সমীচীন বোধ করে না ; সেই জন্য ঐ সকলের উৎপাদনে ভারতবাসীরা এখন আর তােত আসক্তি নাই । একেত তাহারা ধনোৎপাদনে পশ্চাৎপদ, তাহার উপর আবার ক্ষণকালস্থায়ী