পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতায় আদ্ধোদয় যোগ ও স্বদেশ-সেবা । YG: পোড়ো বাড়ী ছিল, তাহদের পর্য্যন্ত যেরূপ অসম্ভব ভাড়া বৃদ্ধি হইয়াছিল, তাহ শুনিলে বিস্ময় জন্মে। প্ৰত্যেক বাড়ীতে যে ঘরে দুই জন লোকের বাস সন্ধুলান হয় না, সেই ঘরে দশ জন লোককে আশ্রয় গ্ৰহণ করিতে হইয়াছিল ; অনেকে স্থানাভাবে মুক্ত আকাশের নীচে চন্দ্ৰাতপ টাঙ্গাইয়া খোলা ছাদের নীচে বাস করিতে বাধ্য হইয়াছিল । এইভাবে শনিবারের দিবা রাত্ৰি কাটিয়া গেল । রবিবার-তখনও রাত্ৰি প্ৰভাত হয় নাই। উষার শুভ্ৰ কুজায়টিকজাল ছিন্ন করিয়া প্ৰভাত রবির হিরণ্যাবর্ণ কিরণ প্ৰবাহ রাজধানীর সুরম্য হল্ম্যশিখরমাল উদ্ভাসিত করিবার পূৰ্ব্বে কলিকাতার রাজপথসমূহ অপূৰ্ব্ব দৃশ্য ধারণ করিয়াছিল। কলিকাতার পূর্ব প্রান্ত হইতে পশ্চিম প্রান্তে গঙ্গাতীর পর্য্যন্ত বিস্তুত শত শত রাজপথ তরঙ্গমালাসঙ্কুল শত শত জন-প্রবাহে পরিণত হইয়াছিল । শ্রেণীবদ্ধ পিপীলিকার ন্যায় বিপুল জন-সংঘ গঙ্গাভিমুখে ধাবিত হইতেছিল। স্নানার্থী রমণী ও পুরুষ, বালক ও যুবকদিগের মুখমণ্ডলে অপূৰ্ব্ব উৎসাহ, অসাধারণ ধৰ্ম্মানুরাগ প্ৰকাশ পাইতেছিল । নরদেহে শিরা ও ধমনী জালের মধ্য দিয়া রুদ্ধিরস্রোত যেরূপ প্রবলবেগে হৃৎপিণ্ড মধ্যে প্রবাহিত হয়, সেইরূপ রাজধানীর রথ্যারাজি দিয়া সহস্র ধারায় জনস্রোত গঙ্গাপ্রবাহ মধ্যে প্রবেশ করিতেছিল । পুণ্যসলিলা গঙ্গার উভয় তীরবর্তী স্নানের ঘাটগুলি কৃষ্ণমক্ষিকাসিন্ধুল মধুচক্রনিচয়ের ন্যায় শোভা পাইতেছিল। যে দিকে চাও, সেই দিকেই বিপুল জানাচ্ছিাস —কাঞ্চাবিক্ষুব্ধ তরঙ্গমালার শ্রেণীর পর শ্রেণী, তরঙ্গের পর তরঙ্গ, তাহার পর তরঙ্গ । পথের এক প্ৰান্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত--- যতদূর দৃষ্টি চলে, কেবল অগণিত মনুস্যমুণ্ড স্রোতের আকারে গঙ্গাভিমুখে প্ৰধাবিত হইতেছে । আর সেই জন-স্রোতের কোলাহল কি বিচিত্ৰ ! কি অপূৰ্ব্ব ! যেন সুদূর সমুদ্রের অশ্রান্ত ও দিগন্তব্যাপী \S)