>38 বিবিধ প্রবন্ধ । নিরীশ্বরবাদীকে “জানি না” বলিতে হয় এবং সেশ্বরবাদী বলেন “ঈশ্বরের ইচ্ছা—কিন্তু সেই ইচ্ছার কারণ কি জানি না।” মানুষের কাজও স্বভাবসিদ্ধ, সংস্কারসিদ্ধ এবং শিক্ষসিদ্ধ বস্তু। সুতরাং তাঙ্গদের মধ্যে অনেকগুলিরই কোনও উদ্দেশুই নিশ্চিত থাকে না, কৰ্ত্তার নিজের মনেও উদ্দেশ্য অনুভূত হয় না । যেগুলির উদ্দেশু অনুভূত হয়, সেগুলিও সকলে সুখানুসন্ধানপ্রেরিত হয় না । এই জন্ত কৰ্ম্ম দ্বিবিধ—নিত্য আর কাম্য । নিত্য কৰ্ম্মে কোনও উদেণ্ড নাই করিতে হয় তাই করি। কাম কৰ্ম্মে উদ্দেশু এবং অভিলাষাদি থাকে। নিত্য কৰ্ম্মও যেমন বিধি প্রণোদিত হইয়া করিতে হয় কাম্য কৰ্ম্মও সেইরূপ বিধি নিষেধ মানিয়া সংযতচিত্তে করিতে হয়। যাহা ইচ্ছা তাহাই যে নিজের মুখোদ্দেশ্যে অসঙ্কুচিতরূপে করিয়া ফেলিতে পারা যায় তাহী নহে । তবে বিধি প্রণোদিত কার্য্যেই ক্রমশঃ শান্তি লাভ হয়। সমাজ সংস্কার । কোন সমাজেরই সংস্কার বিশুদ্ধ অনুকরণের দ্বারা হইতে পারে না। হিন্দু সমাজের কোন নিয়ম তোমার মন্দ বোধ হইয়া থাকে এবং তাহার সংশোধনের ইচ্ছা হইয়া থাকে, একটু মনোযোগ পুৰ্ব্বক দেখ যে, ঐ নিয়মের সহিত অপর কোন কোন নিয়মের ঘনিষ্ঠ সংযোগ আছে, এবং তাহা দেখিলেই কোন ভাগে কেমন করিয়া পরিবর্ত করিতে হইবে, আর হইবে কি না তাহ বুঝিতে পারিবে - ৮ হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলিয়া গিয়াছেন যে, সংস্কারক গাছে গাছে ফলে না । প্রকৃত সংস্কারক বড়ই অসাধারণ জিনিস । কিন্তু আজি কালি যে দুই পৃষ্ঠা ইংরাজি পড়িয়াছে সেই সংস্কারক। হিন্দু সমাজ বড়ই উচ্চ পদার্থ ; যে ইহার মধ্যে জন্মগ্রহণ করিয়াছে সেই ভাগ্যবান পুরুষ । এই সমাজ পৃথিবীর অপর সকল সমাজ অপেক্ষা আধ্যাত্মিক শক্তির অধীন, সুতরাং ইহাতে উপদেন্থ যাজকবর্গের প্রাধান্ত । উপদেষ্টার প্রাধান্ত সংযম ও বিদ্যাবত্তার উৎকর্ষে ; অতএব ব্রাহ্মণম গুলীকে সংযমশীল ও বিদ্যাবান করিয়া রাখিবার চেষ্টা কর, সকল শুভফল ফলিবে এবং হিন্দু সমাজের সম্যক বলবত্তা জন্মিবে। শুদ্ধ আৰ্য্যশাস্ত্রে বিদ্যাবান করিলেও অনেক দূর হইবে, কিন্তু যদি উভয়, সংস্কৃত দর্শনে এবং ইংরাজী বিজ্ঞানে, দেশীয় ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদিগকে প্রগাঢ় বিদ্যাসম্পন্ন করিতে পার তাহা হইলে আর কোন ভয় নাই। হিন্দু সমাজ যে জন্য এতদিন এত অন্তরায় অতিক্রম করিয়া সঙ্গীবাবস্থ আছে, সেই উদ্দেশু বিনা বিয়ে এবং
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৩২
অবয়ব