&o বিবিধ প্রবন্ধ 1 অনায়াসে বিভক্ত করা যায় এবং অগ্নিতে একত্র গলাইয়া আবার সংঘটিত করা যায়। ধাতুদিগের এই সকল অনন্তসাধারণ গুণ থাকায়, কালে উহারাই বিনিময় সাধনের বিশেষ উপযোগী হইয় উঠে । পরস্তু, প্রথমে যখন ধাতুদিগের দ্বারা বিনিময় সাধন হইত, তখন উহাদিগের মুল্য ওজনদ্বারা এবং কষ্টি পাথরে ঘর্ষণ করিয়া নিৰ্দ্ধারিত করিতে হইত। কিন্তু তাহাতে সময়ের অপব্যয় হইত এবং মূল্য নিৰ্দ্ধারণও সৰ্ব্ব । সময়ে সৰ্ব্ববাদিসম্মত হইত না । এই জন্ত যখন সমাজ সম্বৰ্দ্ধিত হইয়া কোন কুলপতি বা রাজার আশ্রয় লাভ করে, তখন বিনিময় সাধক ধাতুখণ্ডগুলি র্তাহ কর্তৃক তুল্যাকৃতি ও তুল্যপরিমাণে স্বনামে অথবা কোন দেবতার নামে মুদ্রিত হইতে থাকে। সেই সকল মুদ্রিত ধাতুখণ্ডের মূল্য রাজকর্তৃক এবপ্রকারে নিৰ্দ্দিষ্ট হওয়াতে ওজন করিয়া আর তাহদের মুল্য নিৰ্দ্ধারণ করিতে হয় না । সেগুলির দ্বারা বিনিময়কাৰ্য্য নিৰ্ব্বিঘ্নে সম্পন্ন হইতে থাকে । সেগুলিকে মুদ্রা বলে। যতগুলি ধাতু প্রচলিত আছে তাহার সকলগুলি হইতেই কোন দেশে বা কোন কালে মুদ্র প্রস্তুত করা হইয়াছে। লৌহের মুদ্র প্রাচীন স্পার্ট নগরে এবং অত্যন্ত্রকাল গত হইল জাপান দ্বীপে চলিয়াছিল। সীসক মুদ্রার প্রচলনের কথা গ্ৰীক এবং লাটিন কবিগণের গ্রন্থাদিতে দৃষ্ট হয়। রাঙ্গ বা টিনের মুদ্র কোন সময়ে ইংলণ্ডে এবং জীবাদ্বীপে এবং মেক্সিকো দেশে চলিয়াছিল । তাম্র মুদ্রা বহুকালাবধি অনেক দেশেই প্রচলিত হইয়া মাসিতেছে । রোম সাম্রাজ্যে, রুসিয়াতে এবং সুইডেন দেশে অনেকদিন পৰ্য্যন্ত তাম্র মুদ্রারই সমধিক প্রচলন ছিল । রৌপ্য এবং স্বর্ণের মুদ্রা যে এক্ষণে সফল সুসভ্য দেশেই প্রচলিত, এ কথা বলা বাহুল্য মাত্র। প্লাটিনম এবং নিকেল নামক দুইট ধাতু হইতেও মুদ্র প্রস্তুত করিবার প্রথমে যে চেষ্টা হইয়াছিল, সে চেষ্টা সফল হয় নাই। সুসভ্যদেশ মাত্রে প্রচলিত মুদ্র তামার, রূপার এবং সোণারই হইয়া থাকে। কাগজের নোটের ব্যবহার ক্রমেই বৃদ্ধি হইতেছে। তাহার মধ্যে যেমন দিন দিন নূতন খনির আবিষ্কার হইয়া ধাতুগুলির অধিকতর পরিমাণে উদ্ধরণ হইতেছে, তেমনি । অল্পমূল্যের ধাতু অধিকতর অল্পমূল্য হইয়া যাইতেছে, এবং এই প্রকার पङ्किद्र भूणांब्र প্রচলন নূ্যন হইয়া পড়িতেছে। ইউরোপের অনেক দেশে তাম্র এবং রৌপ্যমুদার গ্রচলন সংক্ষিপ্ত হইয়া স্নবর্ণ মুদার প্রচলনই বন্ধিত হইয়াছে।
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৬০
অবয়ব