भोद्भौकाळ ○> রহিল। বউটি লেখাপড়া জানিত এবং দেশ-বিদেশের খবরাখরাবও কিছু কিছ: রাখিত-চৌধারীগহিণীর একঘেয়ে বড়মান ষী চালের কথাবাতায় সে বড় বিরক্ত হইয়া উঠিল। খানিকক্ষণ বসিয়া থাকিবার পর, সে লক্ষ্য করিল। তাহার সঙ্গিনী ঘোমটার ভিতর কালে-কালো ডাগর চোখে তাহার দিকে সকৌতুকে চাহিতেছে। বউটর হাসি পাইল, জিজ্ঞাসা করিল--তোমার নাম কি ভাই ? সশীলা সন্দিগ্ৰধসরে বলিল-শ্রীমতী সশীলাসন্দরী দেবী । সশীলার রকম-সকম দেখিয়া বউটির খব। হাসি পাইতে লাগিল । সে বলিল-অত ঘোমটা কিসের ভাই ? তুমি আর আমি ছাড়া তো আর কেউ এদিকে নেই, নাও এস, ঘোমটা খোল, একটা গলপ করি । এই কথা বলিয়া বউটি নিজেই সশীলার ঘোমটা খালিয়া দিল-খলিতেই সশীলার সন্দের মাখের দিকে চাহিয়া সে যেন মগধ হইয়া গেল ; রং যদিও ততটা ফাসা নয়, কিন্তু কালোর উপর অতি শ্রী সে কখনো দেখে নাই, নদীর ধারের সরস সতেজ চিকণ শ্যাম-কলমী-লতারই মত একটা সবজি। লাবণ্য যেন সারা মািখখানা মাখানো । মনুখখানি দেখিয়াই সে এই নিরাভরণা পাড়াগাঁয়ের মেয়েটিকে ভালবাসিয়া ফেলিল। জিজ্ঞাসা করিল-উনি বসে আছেন তোমার কে ভাই, শাশড়ী ? -T —এস, আর একটি সরে এস ভাই, দজনে গল্প করি আর দেখতে দেখতে যাই । তোমার বাপের বাড়ী কোথায় ভাই ? সশীলার ভয় কাটিয়া যাইতেছিল, সে বলিল-সে হলো শিমলে । -কোন শিমলে ? কলকাতা শিমলে ? কলিকাতায় শিমলে আছে নাকি ? কই তাহা তো সশীলা কোনদিন শোনে নাই। সে বলিল-আমার বাপের বাড়ী এখান থেকে বেশী দরে নয়, পাঁচ-ছ’ কোশ পথ, গরর গাড়ী করে যেতে হয় । নদীর ধারে যাবক্ষেত, সর্ষে ক্ষেত, বনো গাছপালা দেখিয়া বউটি খব খশি। এ-সব পন্ধেব বড় দেখে নাই, আঙল দিয়া একটা মাছরাঙা পাখী। দেখাইয়া বলিল-বাঃ, বড় সন্দর তো ! ওটা কি পাখী ভাই ? -ওটা তো মাছরাঙা পাখী, কেন, তুমি দেখ নি কখনো ? বউটি বলিল-ভাই, আমি কলকাতার বাইরে অ্যান্দিন পা দিই নি, খব ছেলেবেলায় একবার বাবার সঙ্গে চন্দননগরে বাগান-বাড়ীতে যাবার কথা মনে আছে, তারপর এই আসছি—তুমি আমায় একটা দেখিয়ে নিয়ে চল । ওটা কিসের ক্ষেত ভাই ? সশীলা দেখিল তাহার সঙ্গিনী আঙল দিয়া নদীর ধারের একটা মৌরীর ক্ষেত দেখাইতেছে-প্রথমটা সে সঙ্গিনীর চোখঝলসানো রং, অদশটপািৰবা দামী সিলোেকর শাড়ী, ব্লাউজ এবং চিকচিকে নেকলেসের বাহার দেখিয়া ভয় ষে অনভব করিতেছিল, তাহার অজ্ঞতা দেখিয়া সাশীলার সে ভয় কাটিয়া অজ্ঞ সঙ্গিনীর উপর একটি স্নেহ আসিল-কলিকাতায় মাছরাঙা পাখী, মৌরীক্ষেত,
