পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প দেওয়া আংঢ়ি-এ কেন আমায় দিতে যাবে ? না ভাই সশীলা জোর করিতে গেল-হােক, ভাই, দেখি • মায়ের দেওয়া বলেই, বউটি বলিল-দর । না ভাই, ওসব রাখো-সে। বরং • সশীলা খব। হতাশ হইল। মািখটি তাহার অন্ধকার হইয়া গেল-সে চুপ৷ করিয়া বসিয়া রহিল । গ্রামের ঘাটে নৌকা লাগিল । বউটি সশীলার হাত ধরিষা বলিল-পায়ে পড়ি ভাই মৌরীফল, রাগ করো না। আচ্ছা, কেন তুমি শধ শােধ তোমার মায়ের দেওয়া আংটি আমায় দিতে যাবে ভাই ? আচ্ছা তুমি যদি দিতে চাও এই পাজের সময় আসবো-অন্য কিছ, বরং দিও-একদিন না হয় খাইয়ো-আংটি কেন দেবে ভাই ! • • • আর আমায় ভুলবে না তো ভাই ? সশীলা ব্যগ্রভাবে বলিল--তোমায় ভুলব ভাই মৌরীফল ? ককখনো না। --তুমি কোন জন্মে যে আমার মায়ের পেটের বোন ছিলে ভাই মৌরীফল - তাহার পর সে একট, আনাড়ি ধরনের হাসিয়া উঠিল-হিঃ হিঃ হিঃ ! কেমন সন্দের কথাটি-মৌরীফল—মৌরীফােল-মৌরীফল-তুমি যে হলে গিয়ে আমার নদীর ধারেব মৌরীফােল-তোমায় কি ভুলতে পারি - কথা শেষ না করিয়াই সে দই হাতে সঙ্গিনীর গলা জড়াইয়া ধবিল, সঙ্গে সঙ্গে তাহার কালো চোখ দটি জলে ভরিয়া গেল । কলিকাতার বউ এই অদ্ভুত প্রকৃতি সঙ্গিনীর অশ্রািপ্লাবিত সন্দর মখখান। বার বার সপোনহে চুম্ববন করিল-তারপর দািজনেই চোখের জলে ঝাপসা দহ্মিন্ট লইয়া দািজনের কাছে বিদায় লইল । দিন কতক কাটিয়া গেল । কিশোরী বাড়ী নাই, কি-একটা কাজে অন্য গ্রামে গিয়াছে, ফিরিতে দ-একদিন দেরি হইবে । মোক্ষদা সকালে উঠিয়া জমিদারগাঁহিণীর আহবানে তাঁহার সাবিত্রী-ব্ৰত প্রতিষ্ঠার আয়োজনে সাহায্য করিতে চৌধরিী বাড়ী চলিয়া গেলেন । যাইবার সময় বলিয়া গেলেন-বউমা, আমার ফেরবার কোন ঠিক নেই, রান্না-বান্না করে রেখো, আমি আজ আর কিছু দেখতে পারব না, চৌধরিী-বাড়ীর কাজ-কখন মেটে বলা যায় না । এ কথা মোক্ষদার না বলিলেও চলিত । কারণ ভোরে উঠিয়া বাসন-মাজা জল-তোলা হইতে আরম্ভ করিয়া এ সংসারের সমস্ত কাজের ভারই ছিল সশীলার উপর। এ সংসারে কিশোরীর বিবাহেব পর কোনদিন ঝি-চাকর প্রবেশ করে নাই—যদিও পন্ধেব বাড়ীতে বরাবরই একজন করিয়া ঝি থাকিত । সশীলার খাটনিতে কোন ক্লান্তি ছিল না, খাটিবার ক্ষমতা তাহার যথেস্ট ছিল-যখন মেজাজ ভাল থাকিত, সমস্ত দিন নীরবে ভাতের মত খাটিয়াও সে বিরক্ত হইত না । শাশড়ী চলিয়া গেলে অন্যান্য কাজকৰ্ম্ম সারিয়া সাশীলা রান্নাঘরে গিয়া দেখিল একখানিও কাঠ নাই। কাঠ অনেক দিনই ফরাইযা গিয়াছে, একথা সশীলা বহবার স্বশারকে জানাইয়াছে। রামতন মধ্যে মধ্যে মজর ডাকাইয়া কাঠ কাটাইয়া লইতেন, এবার কিন্তু অনেক দিন হইল তিনি আর এদিকে দণ্টি