পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মধ্যাহ্ন ভোজন খুব ভালই হোল। এর পর আমরা সেই হতু কিতলায় গিয়ে বসি। সামনে পশ্চিম দিকে নদীর ওপারে শৈলশ্রেণী, বির-ঝির বাতাস বইচে নদীর দিক থেকে। একদল সাদা বাক পাহাডশ্রেণীকে পেছনে ফেলে মেঘের তলা দিয়ে উডে আসচে। এদিকে । প্ৰণববাবু বললেন-আপনি আমার জীবনেব কথা কিছু কিছু সকালবেলা শুনেছেন । আজ একটি অসাধারণ ঘটনার কথা বলবো । এ আমার নিজের চোখে দেখা বলেই আপনার কাছে বলবার ইচ্ছেটা বন্ড প্ৰবল হয়েচে । আপনি জানেন, আমার বাবা ও কাক উগাণ্ডা রেলপথ তৈরীর সময় থেকে ও-দেশে ছিলেন। আমার কাকা বেলজিয়াম কঙ্গোতে কমললেবুর আবাদ করেন, আমার বাবার অনেক আগে থেকে তিনি আছেন সে দেশে, তার চারপাঁচটি ছেলে big game hunter । লোহাব মতন শরীর, অনর্গল সোহালি ভাষা বলতে পারে। সে দেশের নেটিভদের মতই। এসব কথা গল্পেব মত শোনাচ্ছে না। কি ? কিন্তু ঘর-বোলা লোকের কাছে হয়তো এ সব যতই গল্প বলে মনে হোক, আমরা জানি বাংলা দেশের লোক কত দূরে দূরে ছড়িয়ে আছে। পৈতৃক বাসভূমি বলাগড়ের কাছে সিমুলিয়া। দশ বছর বয়সে আমি প্ৰথমে নাইরোবি যাই । ভিক্টোরিয়া নয়ানজা হ্রদের তীরবর্তী কামপালা নামক ছোট শহরে সীতানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলে একজন ভদ্রলোক স্কুল-মাষ্টারী করতেন সে সময়—আমাদের পরিবারের সুঙ্গে তার খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল। সে সময়ে তিনি বিবাহ করেননি, ছুটি-ছাটাতে নাইরোবিতে আমাদের বাসায় এসে বসতেন। তিনি দিনকতক আমায় ইংরেজি পডাবার ভারও নিয়েছিলেন। s সে সময়ে ও-দেশে জিনিসপত্র খুব সস্তা ছিল-মাংস, দুধ, মাখন, কপি যথেষ্ট পাওয়া যেত। সমগ্ৰ নাইরোবিতে তিন ঘর বাঙালী পরিবার ছিল । সকলেই উগাণ্ডা রেলপথের কর্মচারী। আর একজন ছিল খ্ৰীষ্টান, ধর্মপ্রচার কক্সবার কাজে কি এক মিশন কর্তৃক প্রেরিত, মাঝে মাঝে নাইরোবিতে থাকতো, মাঝে মাঝে দূর পল্পী অঞ্চলে যেতো। আমি পনেরো বৎসর একাদিক্ৰমে নাইরোবিতে ছিলাম। বাবা-মাৱ সঙ্গে । ওখানকার জীবন খুব ভালই কেটেছিল। জীবনযাত্রা ছিল সম্পূর্ণ নিরুদ্বেগ, জিনিসপত্র ছিল সন্তা, কত নতুন স্বপ্ন তখন দেখেছি অল্প বয়সে ব্লকবার আমার খুড়তুত ভাই অতুল এসে বেলজিয়ান কঙ্গোর জীবনের এক অপূর্ব ছবি আমার চোখের সামনে ধরলে, সেই আমার তরুণ বয়সে। বাবাকে বললাম, কাকার R 90