পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

র্তার প্রতিভার অমিত তেজে-তার স্থান এ ধরনে নির্দেশ করতে কেউ সাহস করলে না-মানুষ এখানে দিশাহারা হয়ে পড়ল, গত যুগের মাপকাঠির উপৰ আস্থা হারাল, তাদের চোখ ধাধিয়ে গেল, তারা নিশ্চিত মুরুবিয়ানার সুরে তঁাকে বাংলার শেলী কি বাংলার মেটার লিঙ্ক বলতে পারলে না, রবীন্দ্রনাথ বুয়ে cCain lates unclassified phenomenon- অমুক শেলফের অমুক নম্বরের অমুক তাকে রবীন্দ্রনাথের স্থান নির্দিষ্ট করা চলল না। সহজে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের সাহিত্যের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন নানাভাবে। একটা । কথাই এখানে বলি। আমার হাতের কাছে একখানা বাংলা উপন্যাস রয়েচে, নাম "বিজয় বল্লভ', ১৮৮০ সালে সংস্কৃত যন্ত্রে মুদ্রিত। লেখক ভূমিকায় । বলেচেন, “ইংলণ্ডীয় ভাষায় নবেল নামে মনোহব প্ৰসিদ্ধ উপাখ্যান গ্ৰন্থসকল যে প্ৰণালীতে সঙ্কলিত হইয়া থাকে, সেই প্ৰণালী অনুসারে এই পুস্তকখানি রচিত হইয়াছে।” ইত্যাদি। উপাখ্যানভাগ অবশ্য কাদম্বরীর অনুকরণে রচিত, প্ৰকৃতি বর্ণনার মধ্যে পাই Decadent যুগের সংস্কৃত কাব্যের অনুকরণে আডষ্ট ও মামুলি ধরনের বাধিগৎ । পূর্ণিমা থেকে কোকিলের কুহু পৰ্যন্ত তাতে সবাই আছে, নেই কেবল প্ৰাণ। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রকৃতি-বর্ণনাও সম্পূর্ণভাবে সংস্কৃত সাহিত্যের প্রভাবমুক্ত নয়, কিন্তু সর্বপ্রথমে রবীন্দ্রনাথেরই মধ্যে পাই প্ৰকৃতিত্ব বিপুলতা ও রহস্যকে । অনাডম্বর বাহুল্যবর্জিত বলেই তা প্ৰাণবন্ত ; অসাধ{<ণ চক্ষুষ্মান প্ৰতিভা সেখানে কেতাবী বৰ্ণনাপদ্ধতির মোহপাশ কাটিয়ে দিযে নিজের চোখ ও মনকে বড় বলে মেনোচে ; সে দর্শনও নিখুত, তেমন convincing-পদ্মাচরের বিপুল প্রসারের সঙ্গে, পুষ্পিত কাশীবনের সৌন্দর্যের সঙ্গে মন সেখানে একদিকে যেমন এক হয়ে মিশে যায়, অন্যদিকে তেমনি নতুন শক্তির উৎসমুখের সন্ধান পেয়ে নতুন পথে দিগ্নিজয়ে বার হবার অন্ম। ক্ষুর্তিকে লাভ করে। জীবন ও জগতের ব্যাপারে এই আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গীও রবীন্দ্রনাগে।” কাব্যে পাই সর্বপ্ৰথম । আমাদের সাহিত্যের যে আদর্শ ছিল অত্যন্ত খাওঁ, রবীন্দ্রনাথ তার গত পঞ্চাশ বৎসরের সাধনায় তার স্ট্যাণ্ডার্ড এত উঁচু কণ্ঠে দিয়েচেন-সাধারণ গতিতে চলতে চলতে হয়তো দেড়শো বছরেও তা ঘটত কিনা সন্দেহ। তার নব দৃষ্টিভঙ্গী প্রত্যেক জিনিসটি নতুন করে দেখেচে, বিশ্বমানবের সঙ্গে বিশ্বপ্রকৃতির যোগসূত্ৰকে আবিষ্কার করেচে-দৃষ্টির সঙ্গেই নবসৃষ্টির সুচনা হয়েচে । এমন একটি জীবন্ত, সদাজাগ্ৰত মনের পবিচ্যু RV 8