পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

检e बिछूडि-बळ्नांबलौ অপরাহের সঙ্গে ত্রিশ-বত্রিশ বছর আগেকার ভুবনি কেন মিশে আছে ? অারও কত কি-ৰোঁ তো যেত। তারাও মরে হেজে গিয়েছে আজ কত বছর, তাদের কারও কথা মনে কেন ওঠে না ? কারও মুখও কেন মনে নেই ? অথচ এতকাল পরে চোখ বুজে ভাবলেই ভুবনি বোষ্টমীর মুখ সামনে ভেসে ওঠে, যেমন ভেসে ওঠে আমার মায়ের । এ কথার জবাব নেই । আশ্চর্য হয়ে দাড়িয়ে থাকি বনঝোপ-ঘেরা জনশূন্ত পথে, ফুটন্ত ঘেটুফুলের ঝাড়ের ধারে। তার পর—কতবার কখনও বসন্তকালে কখনও গরমকালে, এক-আধবার শরৎকালের অপরাত্ত্বে ওই পথে বেলগাছটার তলায় গিয়ে দাড়িয়েছি। প্রথম বারের পর আরও অন্ততপক্ষে দশবারো বার, কি তার বেশি গত কয়েক বছরের মধ্যে । হয়তো অন্ত কথা মনে ভাবতে ভাবতে গিয়েছি- কোনও একটা বইএর কথা, কি সাংসারিক কোন সমস্তার কথা, কি অর্থচিন্তা, যাই হক। কিন্তু যেমন ওখানে গিয়ে দাড়িয়েছি, চুপ করে দাড়িয়ে মনকে শাস্ত সংযত করবার চেষ্টা করছি, অমনি কত বছরের পার থেকে ভুবন বোষ্ট্রনীর শাস্ত স্থী মুখখান ধীরে ধীরে মনের মধ্যে ফুটে ওঠে। অথচ ভূবনি আমার কেউ ছিল না, আমাদের পাড়ার মানুষও ছিল না সে । খুব বেশি যে তার সংস্পর্শে এসেছি বালো তাও নয় । তার চেয়ে অনেক বেশি মিশেছি যাদের সঙ্গে, তাদের অনেকেই আজ বিস্মৃতির অন্ধকারে বিলীন । কতবার ভেবেছি অবাক হয়ে—কেন এমন হয় ? কিছু বুঝতে পারি নি। শাবলতলার মাঠ অনেক দিন পরে শাবলতলার মাঠ দেখলাম সেদিন । আমার পিসিমার বাড়ীর দেশে । ছেলেবেল্লায় যখন পিসিমার বাড়ী থেকে দুর্গাপুর উচ্চ প্রাইমারি পাঠশালায় পড়তাম সে অাজ পচিশ-ত্রিশ বছর আগের কথা । পিসিমা মারা যাওয়াতে সে গ্রামে আর ঘাই নি কখনও । , সেদিন আবার কার্যোপলক্ষে গরুর গাড়ী চড়ে যেতে যেতে শাবলতলার মাঠ চোখে পড়ল, কিন্তু মন্ত• বড় কি এক কারখানা হচ্ছে সেখানে । রেল লাইন বসেছে মাঠের ওপর দিয়ে— বড় রেল লাইন । কত যে লোহালক্কড় যন্ত্রপাতি এসে পড়েছে! লোকজন কুলিমজুরের ভিড়, ছুমদাম শব্দ, সে এক বিরাট ব্যাপার। 他 চালাঘর ও র্তাবু চারিধারে । ইন্‌জিনিয়ার-ওভারসিয়ারের দল খেটে খেটে সারা হল । পাঞ্জাবী কণ্টনকৃটরের মোটর দাড়িয়ে রয়েছে। তারের খুটি বসানো হচ্ছে, ইলেকট্রিকের ও টেলিফোনের তার খাটানো হবে। ইটবোঝাই কাঠ বোঝাই লরির ভিড় নতুন তৈরি চওড়া রাস্তাগুলোর ওপরে । চুনের ধুলো, সিমেন্টের ধুলো উড়ছে বাতালে।