পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্ট্রি-প্রদীপ S86: এবং নাকাল তার জন্তে যথেষ্ট হয়। কিন্তু পুরুষমানুষই আবার বেগতিক বুঝলে যত সত্বর হাবুডুবু খেতে খেতেও সাতরে তীরের কাছে আসতে পারে—মেয়েরা গভীর জলে একবার গিয়ে পড়লে অত সহজে নিজেদের সামলে নিতে পারে না । তবুও আমি হিরন্ময়ীকে দূরে রাখবার চেষ্টাই করলাম। একদিন দুপুরের পরে হিরন্ময়ীদের বাড়িতে পুলিস এসেছে শুনলাম । পুলিস কিসের ? একে ওকে জিজ্ঞেস করি কেউ সঠিক উত্তর দেয় না অথচ মনে হ’ল ব্যাপারটা সবাই জানে। এগিয়ে গেলুম—ওদের বাড়ির সামনের তেঁতুলতলায় বড় দারোগা চেয়ার পেতে বসে—পাড়ার লোকদের সাক্ষ্য নেওয়া চলেছে। দেখলাম গ্রামে ওদের মিত্র বড় কেউ নেই। আমি আগেও যে একথা না জানতাম এমন নয়—তবে পাড়াগায়ের কানাঘুষোতে কান দিই নি । বিকেলের দিকে হিরন্ময়ীর মা আর বিধবা দিদিকে থানায় ধ'রে নিরে গেল। কাছারির মুহুরী সাতকড়ি মুখুয্যে আমার কাছেই দাড়িয়ে ছিল। সে বললে—ও মেয়েটার তত দোষ দিই নে—মী-ই যত নষ্ট্রের গুরুমশাই । ওই তো ওকে শিথিয়েছে। নইলে মেয়েটার সাধ্যি কি,—কিন্তু মাগী কি ডাকাত ! মেয়েটার প্রাণের আশঙ্কা করলি নে একবারও ? ব্যাপারটা বুঝতে আমার দেরি হ'ল না। সাতকড়ি আরও বলল—কালীনাথ গাঙ্গুলী কি গ্রাম ত্যাগ করেছে সাধে ? এইজন্তেই সে বাড়িমুখো হয় না, ওদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখে না। এত কথা আমি কিন্তু জানতাম না—এই নতুন শুনলাম। আমি মুশকিলে পড়ে গেলাম —আমি এখন কি করি ? হিরন্ময়ীর মা আর দিদি দোষী কি দোষী নয়—সে বিচারের ভার আছে অন্ত বিচারকের ওপর—সাতকড়ি মুখয্যের ওপর নয় । কিন্তু এদের মোকদম উঠলে উকীল নিযুক্ত কে করে, এদের স্বাৰ্থ বা কে দেখে, এদের জন্যে পয়সা খরচই বা কে করে ? এদিকে আর এক মুশকিল। ওর মা আর দিদিকে যখন ধরে নিয়ে গেল, হিরন্ময়ী তখন ওদের বাড়ির সামনে আড়ষ্ট হয়ে দাড়িয়ে । সামনে অন্ধকার রাত, সেরাত্রে সে একাই বা বাড়িতে থাকে কেমন ক’রে, বাড়িতে আর যখন কেউই নেই—অথচ সন্ধ্যা পর্য্যস্ত কেউ তাকে নিজের বাড়িতে ডাকলে না। সন্ধ্যার সময় ও-পাড়ার কৈলাস মজুমদারের স্ত্রী এসে ওকে ওঅবস্থায় দেখে বললেন—ওম, এ মেয়েটা এখানে একা দাড়িয়ে আছে যে ! ছেলেমানুষ, বাড়িতে একা থাকবেই বা কি ক'রে । ওর মা দিদি কি করেছে জানি নে—কিন্তু ওকে আমি চিনি। ও পাগলী, আনন্দময়ী । এস তো মা হিরণ, তোমাদের হারিকেনটা বাড়ির ভিতর থেকে নিয়ে ঘরে চাবি দিয়ে এস। ওকে জায়গা দিলে যদি জাত না থাকে—তবে না থাকল তেমন জাত | মজুমদার-গিনী যদি কোন কথা না বলে নিঃশব্দে হিরন্ময়ীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতেন তবে হয়ত কোনই গোলযোগ বাধতো না—কিন্তু শেষের কথাটি ব’লে ফেলে তিনি নিতান্ত নিৰ্ব্বোধের মত কাজ ক'রে বসলেন। কাছেই গ্রামের সমাজপতি আচাৰ্য্যি-মশায়ের বাড়ি। তাদের সঙ্গে বাধল তুমুল ঝগড়া। শশধর আচার্য্যের স্ত্রী অনেকক্ষণ নিজের মনে একতরফ গেয়ে যাবার পর উপসংহারে বললেন—ও বড় ভাল মেয়ে—না 7 মুখ খুললেই অনেক কথা বেরিয়ে পড়বে। সব জানি, সব বুঝি। চুপ করে থাকি মুখ বুজে—বলি মাথার ওপর একজন আছেন, তিনিই দেখবেন সব—আমি কেন বলতে যাই ? মজুমদার-গিী বললেন—ষা কর নবে, আবার এ মেয়েটার নামে কেন বা তা বলছ ? সেটাই কি ভগবান সইবেন ? আচার্ষ্যি-মশায়ের স্ত্রী বাক্ষদের মত জলে উঠলেন—আরও দ্বিগুণ টেচিয়ে বললেন-ধর্থ , ه ډ-سه .fR. q