পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড).djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

its Wy হল পেকে বললে-খেয়ে নে আঘারা, এমন একখানা কঁাটালের দাম হাটে এক আনার কম নয়, এমন অসময়ে। মুই একখানা শেষ করে আর পারবো না । বয়েসও তো হয়েচে তোর চেয়ে। স্থাও দিদিমশি, একটু গুড় জল স্থাৎ তিলু বললে--ত হোলে সাকুরেদের কাছে হেরে গেলে দাদা। গুড় জল এমনি খাবে কেন, দুটো মুনো নৱকোল দি, ভেঙে দুজনে খাও গুড় চিয়ে । তবে বেশি গুড় দিতি পারবো না। এবার সংসারে গুড় বাড়ন্ত । দশখানা কেনা ছিল, দুখানাতে ঠেকেচে । উনি বেজায় গুড় খান । দিনটা বেশ অ্যানগেদি কাটল । হল পেকে এবং অঘোর মুচি চলে যাওয়ার সময় চৈতন্যভারতী মহাশয়কে আর একবার সাষ্টাঙ্গে প্ৰণাম করে চলে গেল । ভবানী বাড়িয্যে তিলুকে নিয়ে রোজ নদীতে নাইজে যান সন্ধ্যাবেলা, আজিও গেলেন। ইছামতীর নির্জন স্থানে নিবিড় নল-খাগড়ার ঝোপের মধ্যে দিয়ে মুক্তে-খোজা জেলেরা ( কারণ ইছামতীতে বেশ ধামী মুক্তাও পাওয়া যেত)। গত শীতকালে যে সুড়ি পথটা কেটে করেছিল, তারই নীচে বাবলা যজ্ঞিডুমুর, পিটুলি ও নাটকান গাছের তলায় ভবানী ও তিলু নিজেদের জন্যে একটা ঘাট করে নিয়েছে, সেখানে হলদে বাবলা ফুল ঝরে পড়ে টুপটাপ করে স্বচ্ছ কাচ-চক্ষু জলের ওপর, গুলঞ্চের সরু ছোট লতা নট কান ডাল থেকে জলের ওপর ঝুলে পড়ে, তেচোকো মাছের ছানা স্নানরতা তিলু সুন্দরীর বুকের কাছে খেলা কয়ে, হাত বাড়িয়ে ধরতে গেলে নিমেষের মধ্যে অন্তহিত হয় ; ঘনাস্তৱাল বনকুঞ্জের ছায়ায় কত কি পাখী ডাকে সন্ধ্যায়। ওদের কেউ দেখতে পায় না ডাঙার দিক থেকে। ভবানী বাড়ুধ্যে জলে নেমে বললেন-চলো সাভার দিয়ে থ’, ‘রে ঘাইতিলু বললে-চলুন, ওপারের ক্ষেত থেকে পটল তুলে আনি-ছিঃ, চুরি করা হয়। পাড়াগােঁয়ে বুদ্ধ তোমার-চুরি বোঝা না ? —ষা বলেন। আমরা কত তুলে আনতাম। --দেবে সাতায় ? --চলুন। গো-ঘাটার দিকে যাবেন ? মাঠের বড় অশথতলার দিকে ? তিলু অদ্ভুক্ত সুহ্মর ভাবে সাঁতার দেয়। সুন্দর, ঋজু, গুয়ািহটি জ্বলের তলার নিঃশব্দে চলে, পাশে পাশে ভবানী বাড়ধ্যে চলেন। হঠাৎ এক জায়গায় গহিন কালো জ্বলে ভবানী বাড়ুষ্যে বলে ওঠেন-ও তিলু তিলু। তিলু এগিয়ে চলেছিল, থেমে স্বামীর কাছে ফিরে এসে বললে-কি ? কি ? ভবানী দুহাত তুলে অসহায়ের মত খাবি খেরে বললে—তুমি পালাও তিলু। আমায় কুমীরে ধরেচে-তুমি পালাও ! পালাও ! খোকাকে দেখো।-- তিলু হতভম্ব হয়ে বললে--কি হয়েচে বলুন না! কি হয়েচে । সে কি গো !