ভালো—মামার বাড়ি গিয়ে আমার ক্ষতস্থানটা দেখিয়ে ওষুধ দিয়ে নিয়ে আসবো। ঘরের মধ্যে জামা গায়ে দিতে গিয়ে মনে হোলো—আমার ঘরের মধ্যে কে যেন ঢুকেছিল।
কিছুই থাকে না ঘরে। একটা ছোট চামড়ার সুটকেস্—তাতে খানকতক কাপড়-জামা। কে ঘরের মধ্যে ঢুকে সুট্কেসটা মেজেতে ফেলে তার মধ্যে হাতড়ে কি খুঁজেচে—কাপড়জামা, বা, একটা মনিব্যাগে গোটা-দুই টাকা ছিল সেগুলো ছোঁয়নি। বালিশের তলা—এমন কি, তোশকটার তলা পর্য্যন্ত খুঁজেচে।আমি প্রথমটা ভাবলাম, এ কোনো ছিঁচকে চোরের কাজ। কিন্তু চোর টাকা নেয় নি—তবে কি, রিভলভারটা চুরি করতে এসেছিল? সেটা আমার পকেটেই আছে অবিশ্যি—সে উদ্দেশ্য থাকা বিচিত্র নয়।
জানকীবাবুকে ডেকে সব কথা বল্লাম। জানকীবাবু শুনে বল্লেন—চলুন, জায়গাটা একবার দেখে আসি।
ঘরে ঢুকে আমরা সব দিক ভালো ক’রে খুঁজে দেখলাম। সব ঠিক আছে। জানকীবাবু আমার চেয়েও ভালো ক’রে খুঁজলেন, তিনিও কিছু বুঝতে পেরেচেন ব’লে মনে হোলো না।
বল্লাম—দেখলেন তো?
—টাকাকাড়ি কিছু যায় নি?
—কিছু না।
—আর কোনো জিনিস আপনার ঘরে ছিল?
—কি জিনিস?
—অন্য কোনো দরকারি—ইয়ে—মানে—মূল্যবান?
—এখানে মূল্যবান জিনিস কি থাকবে?
—তাই তো!
হঠাৎ আমার একটা কথা মনে পড়লো। মিস্মিদের সেই কবচ আর দাঁতনকাঠির টুক্রোটা আমি এই ঘরে কাল পর্য্যন্ত রেখেছিলাম, কিন্তু কাল কি মনে ক’রে শ্রীগোপালের বাড়ী যাবার সময় সে জিনিস দু’টি আমি পকেটে ক’রে নিয়ে গিয়েছিলাম—এখনও পর্য্যন্ত সে দু’টি আমার পকেটেই আছে। কিন্তু কথাটা জানকীবাবুকে বলি-বলি ক’রেও বলা হোলো না।
জানকীবাবু যাবার সময় বল্লেন—ননীর ওপর আপনার সন্দেহ হয়?
—হয় খানিকটা।
—একবার ওকে ডাকিয়ে দেখি।
—এখন নয়। আমি মামার বাড়ী যাই, তারপর ওকে ডেকে জিগ্যেস করবেন।
কিছুক্ষণ পরে আমি জানকীবাবুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মামার বাড়ী চলে এলাম।