চাদের পাহাড় פגף ঠন্ ঠন করে ঘণ্টা বাজছে, মাঝে মাঝে দু-চারখানা মোটরও যাচ্ছে । এর সঙ্গে মনে হল আর একটা ছবি—সামনে আগুনের কুণ্ড, কিছুদূরে বৃত্তাকারে ঘিরে বসে আছে কোয়োট ও হায়েনার দল। ওদের পিছনে নেকড়েটার দুটো গোল গোল চোখ আগুনের ভাটার মত জলছে অন্ধকারের মধ্যে। কোনটা স্বপ্ন ?--চিমানিমানি পৰ্ব্বতে যাপিত সেই ভয়ঙ্কর রাত্রি, না আজকের এই রাত্রি ? ইতিমধ্যে সলসবেরিতে সে একজন বিখ্যাত লোক হয়ে গেল। রিপোর্টারের ভিড়ে তার হোটেলের হল সব সময় ভর্টি। খবরের কাগজের লোক আসে তার ভ্রমণবৃত্তাস্ত ছাপাবার কণ্টাক্ট করতে, কেউ আসে ফটো নিতে। আত্তিলিও গাত্তির কথা সে ইটালিয়ান কনসাল জেনারেলকে জানালে। তার আপিসেব পুরোনো কাগজপত্র ঘেটে জানা গেল, আক্তিলিও গাত্তি নামে একজন সয়াস্ত ইটালিয়ান যুবক ১৮৭৯ সালের আগস্ট মাসে পটুগীজ পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে জাহাজড়বি হবার পরে নামে। তার পর যুবকটির আর কোন পাত্তা পাওয়া যায় নি। তার আত্মীয়-স্বজন ধনী ও সম্বাস্ত লোক। ১৮৯০-৯৫ সাল পর্য্যন্ত তার তাদের নিরদিষ্ট আত্মীয়ের সন্ধানের জন্যে পূৰ্ব্ব পশ্চিম ও দক্ষিণ আফ্রিকার কনস্থলেট আপিসকে জালিয়ে খেয়েছিল, পুরস্কার ঘোষণা করা ৭ হয়েছিল তার সন্ধানের জন্যে। ১৮৯৫ সাল থেকে তার হাল ছেড়ে দিয়েছিল। পূব্বের্ণক্ত মুসলমান দোকানদারটির সাহায্যে সে ব্লাকমুন ষ্ট্রটের বড় জহুরী রাইডাল ও মর্সবির দোকানে চারখানা পাথর সাড়ে বত্ৰিশ হাজাব টাকায় বিক্ৰী করলে। বাকী দুখানার দর আরও বেশী উঠেছিল, কিন্তু শঙ্কর সে দুখান! পাণব তার মাকে দেখাবার জন্যে দেশে নিযে যেতে চায়। এখন বিক্ৰী করতে তার ইচ্ছে নেই। 毒 革 岑 赛 নীল সমুদ্রে !. বম্বেগামী জাহাজের ডেকে দাড়িয়ে পটুগীজ পূৰ্ব্ব-আফ্রিকার বেইরা বন্দরের নারিকেলবনশ্যাম তীরভূমিকে মিলিয়ে যেতে দেখতে দেখতে, শঙ্কর ভাবছিল তার জীবনের এই অ্যাডভেঞ্চারের কথা। এই তো জীবন, এই ভাবেই তো জীবনকে ভোগ করতে চেয়েছিল সে । মানুষের আয়ু মানুষের জীবনের ভুল মাপকাঠি। দশ বৎসরের জীবন উপভোগ করেছে সে এই দেড় বছরে। আজ সে শুধু একজন ভবঘুরে পথিক নয়, একটা জীবন্ত আগ্নেয়গিরির সহ-আবিষ্কারক। মাউণ্ট আলভারেজকে সে জগতে প্রসিদ্ধ করবে। দূরে ভারত মহাসমুদ্রের পারে জননী জন্মভূমি পুণ্যভূমি ভারতবর্ষের জন্য এখন মন তার চঞ্চল হয়ে উঠেছে। তার মনটি উৎসুক হয়ে আছে, কবে দূর থেকে দৃশ্যমান বোম্বাইয়ের রাজাবাই টাওয়ারের উচু চূড়োটা মাতৃভূমির উপকূলের সান্নিধ্য ঘোষণা করবে তার পর বাউলকীৰ্ত্তনগান-মুখরিত বাংলাদেশের প্রাস্তে তাদের স্যামল ছোট পল্লী. সামনে আসছে বসন্ত কাল•••পল্লীপথে যখন একদিন সজনে ফুলের দল পথ-বিছিয়ে পড়ে থাকবে, বৌ
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৯২
অবয়ব