পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cबकैोच्न झूलवारौँ ঔ৬১ নামটি নেই—কখন বাড়ী পৌঁছব ভাবুন তো ? —এদের কাওই এই রকম–আস্কন না সবাই মিলে একটু কাগজে লেখালেখি করি। সেদিন বড়গেছে ইস্টিশানে স্থটো ট্রেনের লোক এক ট্রেনে পুরলে—দাড়াবার পর্ধ্যস্ত জায়গা নেই-তাও কদমতলায় এল এক ঘণ্টা লেট, । —ঐ আপিসের সময়টা একটু টাইমমত যায়--তার পর সব গাড়ীরই সমান দশ—জা, কি ভুল যে করেছি মশাই এই লাইনে বাড়ী করে। রিটায়ার করলাম, কোথায় বাড়ী করি, কোথায় বাড়ী করি, আমার শ্বশুর বললেন, তার গ্রামে বাড়ী করতে— —সে কোথায় মশাই ? —এই প্রসাদপুর, যেখানে প্রসাদপুরের ঠাকুর আছেন, মেয়েদের ছেলেপুলে না হলে মাদুলি নিয়ে আসে, হাওড়া ময়দান থেকে পঁচিশ মাইল, বেশী না । ভাবলাম কলকাতার কাছে, সস্তাগগু হবে, পাড়াগা জায়গা শ্বশুরবাড়ীর সবাই রয়েছেন—তখন কি মশাই জানি ? তিন-চার হাজার টাকা খরচ করে বাড়ী করলুম, দেখছি যেমনি ম্যালেরিয়া তেমনি যাতায়াতের কষ্ট, পঁচিশ মাইল আসতে পচিশ খেলা খেলছে। এই টুপিড গাড়ীগুলো— —পচিশ কি স্তর, তিন পচিশং পচাত্তর খেলা বলুন ! আমারও পৈতৃক বাড়ী ঐ প্রসাদপুরের কাছে নরোত্তমপুর। ডেলি প্যাসেঞ্চারি করি, কান্না পায় এক-এক সময়— আমি যাচ্ছিলাম চাপাডাঙ্গা । লাইনের শেষ স্টেশন । এদের কথাবার্তা শুনে ভয় হলো । স্টেশন থেকে চার মাইল দূরে দামোদর নদীর এপারেই আমার এক মাসীমা থাকেন, মেসোমশায় নাকি মৃত্যুশয্যায়, তাই চিঠি পেয়ে মাস্টমার সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধে সেখানে চলেছি। ষে রকম এরা বলছে, তাতে কখন সেখানে পৌঁছব কে জানে ? কামরার এক কোণের বেঞ্চিতে একটি যুবক ও তার সঙ্গে একটি সতেরো-আঠারো বছরের স্বন্দরী মেয়ে বসেছিল। মেয়েটির পরনে সিস্কের ছাপ-শাড়ী, পায়ে মাদ্রাজী চটি, মাথার চুলগুলো যেন একটু হেলাগোছা ভাবে বাধী—সে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে চেয়ে ছিল। যুবকটি মাঝে মাঝে সকলের কথাবার্তা শুনছে, মাঝে মাঝে বাইরের দিকে চেয়ে ধূমপান করছে। গাড়ী ছেড়ে তিন-চারটে স্টেশন এল। পান, পটল, আলু, মাছের পুটলি হাতে ভেলি প্যাসেঞ্জারের দল ক্রমে নেমে যাচ্ছে। বাকি দল এখনও সামনাসামনি বেঞ্চিতে মুখোমুখি বসে কোচার কাপড় মেলে তাল খেলছে। মাঝে মাঝে ওদের হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে এঞ্জিনের বৰূৰক শব্দ ভেদ করে—টু হাটস্।ি নে ট্রাম্প ৷ থি স্পেউস! যখন জাঙ্গিপাড়া গাড়ী এসে দাঁড়িয়েছে তখন বেলা যায়-যায় । জাঙ্গিপাড়া স্টেশনের সামনে বড় দীঘিটার ধারের তালগাছগুলোর গায়ে রাঙা স্লোদ । শেষ ভেলি প্যাসেঞ্জারটি জাঙ্গিপাড়ায় নেমে যাওয়াতে গাড়ী খালি হয়ে গেল—একেবারে খালি নয়, কারণ রইলাম কেবল আমি। কোণের বেঞ্চির দিকে চেয়ে দেখি সেই যুবক ও তার গজিনী মেয়েটিও রয়েছে।