পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিরাজ-বেী S8 সোনার মত বৰ্ণকে হরণ করিল ? ভগবান ! এ কি গুরুদণ্ড করিয়াছ ! যদি কখনও দেখা হয়, এ মুখ সে কেমন করিয়া বাহির করিবে। যত দিন এ দেহে প্ৰাণ থাকে, ততদিন আশা একেবারে নির্মূল হইয়া মরে না। তাই, তাহার হয়ত অতি ক্ষীণ একটু আশা অন্তঃসলিলার মত অতি নিতৃত অন্তস্তলে তখনও বহিতেছিল। দয়াময়! সেটুকু শুকাইয়া দিয়া cडांमाझ कि लांड श्ल ? তাহার জ্ঞান ফিরিয়া আসিবার পরে রোগশয্যায় শুইয়া স্বামীর মুখ যখন উজ্জল হইয়া দেখা দিত, তখন কখনও বা সহসা মনে হইত, যাহা সে করিয়াছে, সে ত অজ্ঞান হইয়াই করিয়াছে, তবে কি সে অপরাধের ক্ষমা হয় না? সব পাপের প্রায়শ্চিত্ত আছে, শুধু কি ইহারই নাই ? অন্তৰ্যামী ত জানেন, যথার্থ পাপ সে করে নাই, তথাপি যেটুকু হইয়াছে, সেটুকুও কি তাহার এত দিনের স্বামিসেবায় মুছিবে না ? মাঝে মাঝে বলিত, তঁর মনে তারাগ থাকে না, যদি হঠাৎ পায়ের উপর পড়ি, সব কথা খুলে বলি, আমার মুখের পানে চেয়ে কি করেন তা হ’লে। তাহা হইলে সম্ভবতঃ কি যে করেন, এই কল্পনাটাকে সে যে কত রঙে কত ভাবে ফুটাইয়া দেখিবার জন্য সারারাত্রি জাগিয়া কাটাহঁত, ঘুম পাইলে উঠিয়া গিয়া চােখে মুখে জল দিয়া আবার নূতন করিয়া ভাবিতে বসিত-হা ভগবান! তাহার সেই বিচিত্র ছবিটাকে কেন এমন করিয়া দুই পায়ে মাড়াইয়া গুড়াইয়া দিলে ? সে তাহার স্বামীর পায়ের উপর উপুড় হইয়া পড়িয়া কোন লজ্জায় আর এ মুখ তুলিয়া তাহার মুখের পানে চাহিবো! ঘরে আর একজন রোগিণী ছিল, সে বিরাজের কান্না দেখিয়া উঠিয়া আসিয়া বিস্ময়ের স্বরে প্রশ্ন করিল, কি হ’ল গা ? কেন কঁদাছ ? হায় রে! আর একজন বিরাজের কান্নার হেতু জানিতে চায়! বিরাজ তাড়াতাড়ি চোখ মুছিয়া ফেলিল এবং কোনদিকে না চাহিয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল ।