পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার সভাপতিত্বে চাদার খাতা, আইন-কানুনের তালিকা এবং পুস্তকের লিস্ট তৈরী হইতে বিলম্ব হইল না । এতদিন ছেলেদের ধর্মপ্রচারের উৎসাহ গ্রামের লোকেরা কোনমতে সহিয়াছিল। কিন্তু দুই-একদিনের মধ্যেই তাদের আদায়ের উৎসাহ গ্রামের ইতার-ভদ্র গৃহস্থের কাছে এমনি ভয়াবহ হইয়া উঠিল যে, খাতাবগলে ছেলে দেখিলেই তাহারা বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করিয়া ফেলিতে লাগিল । বেশ দেখা গেল, গ্রামে ধর্মপ্রচার ও দুর্নীতি-দলনের রাস্তা। যতখানি চওড়া পাওয়া গিয়াছিল, লাইব্রেরীর জন্য অর্থসংগ্রহের পথ তাহার শতাংশের একাংশও প্রশস্ত নয়। অপূর্ব কি করিবে ভাবিতেছিল, এমন সময় হঠাৎ একটা ভারী সুরাহা চোখে পড়িল । স্কুলের অদূরে একটা পরিত্যক্ত, পোড়ে। ভিটার প্রতি একদিন অপূৰ্বর দৃষ্টি আকৃষ্ট হইল । শোনা গেল, ইহা একাদশী বৈরাগীয় । অনুসন্ধান করিতে জানা গেল, লোকটা কি-একটা গৰ্হিত সামাজিক অপরাধ করায় গ্রামের ব্রাহ্মণরা তাহার ধোপা, নাপিত, মুদী প্রভৃতি বন্ধ করিয়া বছরদশেক পূর্বে উদ্ধাস্তু করিয়া নিৰ্বাসিত করিয়াছেন। এখন সে ক্রোশ-দুই উত্তবে বারুইপূব গ্রামে বাস করিতেছে। লোকটা নাকি টাকার কুমির ; কিন্তু তাহার সাবেক নাম যে কি, তাহ কেহই বলিতে পারে নাঠাড়ি ফাটার ভয়ে বহু দিনের অব্যবহারে মানুষের স্মৃতি হইতে একেবারে লুপ্ত হইয়া গেছে। তদবধি এই একাদশী নামেই বৈরাগীমহাশয় সুপ্ৰসিদ্ধ। অপূৰ্ব তাল ঠকিয়া কহিল, টাকার কুমির। সামাজিক কদাচাের । তবে ত এই ব্যাটাই লাইব্রেরীর অধোক ভার বহন করিতে বাধ্য। না হইলে সেখানে ধোপা, নাপিত, মুদ্দীও বন্ধ ! বারুইপুবেব, জমিদার তা দিদির মামাশ্বশুর। ছেলেরা মাতিয়া উঠিল এবং অবিলম্বে ডোনেশনের খাতায় বৈরাগীর নামের পিছনে একটা মস্ত অঙ্কপাত হইয়া গেল । একাদশীর কাছে টাকা আদায় করা হইবে, না হইলে অপূর্ব তাহার দিদির R