পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বয়নবিদ্যা [ १७२ ] বয়নবিদ্যা বাক্সের প্রাস্তে বাইয়া পৌছে। এই টান ঠিক না হইলে কাপড় বুনানি ভাল হয় না। মুঠকাঠ টানিবারও মাত্রার হিসাব আছে। বস্ত্রবিশেষে কম বা বেশী জোরে মুঠকাঠ টানিতে হয় অর্থাৎ যদি সরু স্থতার কাজ হয়, অথবা বেশী থাপি বুনিবার অভিপ্রায় না থাকে,তবে অপেক্ষাকৃত কিছু কম জোরে টানা আবশ্বক, আর যদি ছিট, রেপার প্রভৃতি মোটা কাজ হয় এবং চাপ বুনানির প্রয়োজন হয়, তবে কাজেই একটু বেণী জোরে মুঠকাঠ টান দরকার। কাপড়ের ভালমন্দ এই টানের উপরে নির্ভর করে। ৭৮ ইঞ্চি বোন হইলেই বাহির নরাজ ঢ়িল দিয়া কোল নরাজে কাপড় জড়াইয়া লইৰে এবং তৎপরে "ব” ইত্যাদিও সরাইয়া লইতে হইবে । মুঠকাট টানিলে যদি দক্তি পড়েনের স্থতায় ঘা না দিয়া দূরে থাকে, তবে বুঝিতে হইবে, কোল নরাজ বেশী জড়ান হইয়াছে, সুতরাং আবখ্যক মত কোল নরাজ টিল করিয়া দিবে বা তাতখানি কোলের দিকে সরাইয়া লইবে । কোল নরাজে কাপড় জড়াইবার পূৰ্ব্বে তরল মাড় দিয়া বোন অংশ ভিজাইয়া কড়ি বা প্রস্তরখণ্ড দ্বারা ভাতির ভালরূপ মাজিয়া থাকে, ইহাতে কাপড় বেশ মসৃণ এবং জমাট হয় । মাকুর যে দিকে ঢাকা আছে, সেই দিক্‌ দক্তির উপর ও যে দিকে ছিদ্র ( Eye ) আছে, তাহ কারিকরের কোলের দিকে রাখিয়া মাকুর মধ্যে থালি ( Pira ) লাগাইয়া পূৰ্ব্বকথিতরুপে বুনিতে থাকিবে । টানার স্থত কতকগুলি একত্র কুটি বাধা থাকে বলিয়া প্রথমেই পড়েনের স্থত টানার সুতার ঠিক , সমকোণ ভাবে বসান যায় না। ২৩ ইঞ্চি বুন হইলে পর ছিলে र्मिग्ना রীতিমত কাপড় বুনিতে আরম্ভ করিবে । ৪% বা ৫ ইঞ্চি বুনিবার পরে ওসারি লাগাইবে, কিন্তু তাহাতে যেন বেশী জোর না লাগে। প্রথমে বুনিবার সময় টানার স্বতা মাঝে মাঝে ছিড়িবে, কিন্তু যেমন ছিড়িবে তেমনই সেই স্থতাটি“ব”র মধ্য হইতে বাহির করিয়া জোশরের উপর উল্টাইয়। রাখিবে ; নচেৎ পাশের অন্ত সুতার সঙ্গে জড়াইয়া বীপ উঠিবার বিঘ্ন ঘটাইবে, এরূপ কতকটুকু বুনিবার পর ছিন্ন স্বতাটি মেচ কার সাহায্যে “ব” এবং সানার মধ্য দিয়া আনিয়া যথাস্থানে জুড়িয়া দিবে,এ বিষয় আলস্ত করিলে কাপড় বুনা ভাল হইবে না। যদি বেশী স্থতা ছিড়ে, তবে যে জষ্ঠ ঐৰূপ হইতেছে, তাহার সংশোধন করা আবগুক । চেক, ছিটু বা রেপার বুনিতে যে যে রঙ্গের স্থতার দরকার, তাহা ভিজাইয়া নলী করিয়া পৃথক পৃথক মাকুর মধ্যে পুরিয়া লওয়াই সুবিধা, যখন যে রঙ্গের স্বতার দরকার হইবে, তখন সেই মাকুটি ব্যবহার করিবে । পাড় বুনিবার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা দরকার, কারণ যে হুতার জমি বুনানি হয়, পাড়ে সেই স্থতার ২টি বা ৩টি একত্র করিয়া একটি সানার পূরিয়া দেওয়া আবগুক ; কারণ সেগুলিতে বেণী চাপ পড়ে ; সুতরাং বুনিবার সময় মাঝে মাঝে বাড়িয় যায়, তাহ ওসারি লাগাইয়া ঠিক করিতে হয়। মাড়প্রকরণ–( size ) আমাদের দেশে মোট সুতায় সাধারণতঃ ভাতের মও এবং সরু স্থতার খইএর এবং মাঝারি সুতায় চিড়া ও খইমিশ্রিত মও ব্যবহৃত হইয়া থাকে। আতপ চাউল ভালরূপ গলাইয় গাঢ় মও করিবে, পরে ' ব্যবহার করিবার সময়ে তাহাতে একটু চুণের জল ও তেঁতুল মিশাইয়৷ জল দিয়া পাতলা করিবে ও কাপড় দিয়া ছাকিয় লইবে । টাটুকা খই থালায় (Plate) বা পাথরে চটুকাইয়া লইলে একটু আট মত হইবে, তখন উহা দ্বারা মাড়ের কাজ করিবে । বেশী থই-ভিজান মাড় ভাল নহে। বর্তমান সময়ে আলু, কচু, বার্লি ইত্যাদির মাড় ব্যবহারেরও চেষ্ট হইতেছে। ফলতঃ মাড় কিছু আঠা রকম হইবে, অথচ এরূপ না হয় যে, স্থতায় স্থতায় জোড়া লাগে, সেজন্ত উছাতে তৈলাক্ত পদার্থ থাকাও দরকার , জোলারা ভাতের মাড় দেওয়ার পরে তেল মাঞ্জন পৃথক্ দিয়া থাকে। কেহ কেহ বলেন, /৮ সের চাউল, /২ সের সাগুদান, জিঞ্জিলী তেল অভাবে বাদাম তৈল /২ সের এবং ১৬ গ্যালন জল একত্র সিদ্ধ করিলে উত্তম মাড় তৈয়ার হয়। অবগু প্রথমে উক্ত দ্রব্যাদি উত্তমরূপে সিদ্ধ করিয়া নামাইবার পূৰ্ব্বে তৈল দেওয়া উচিত । রং করা-( Dyeing ) স্থতার রং করার ব্যাপারটি বড় সহজ নহে। রেশম বা পশমে পাকা রং ফলান সহজ, কিন্তু কাপাসের সুতার পাকা রং করা অতি কঠিন,অনেক বৈজ্ঞানিক প্রক্রিস্নার সংযোগ ও অনেক যন্ত্রের সাহায্য ভিন্ন হয় না । আমাদেব দেশে কেবল নীল, লাল, কাল ও হবিদাদি রঙ্গের স্থত ছোপান হইতেছে। ঐ রঙ গুলি বিলাতী রঙ অপেক্ষ অনেক খারাপ। নীল রং করিতে নীল বড়ি, মতি গুড়, সাজিমাট ও দূৰ্ণ কাঠ আবগুক। বর্তমান সময়ে এদেশীয় স্থতার রঙ, বেশ পাক হইয়াছে । তবে রজকের কৃপায় অন্ত রঙ প্রায়ই ক্ষারে জলিয়া নঃ হইয়া থাকে। সুতী-( Yarns ) তাতি জোলার বলে “চরকা উঠিয়৷ গিয়া কাপড় বুনিবার সুখ উঠিয়া গিয়াছে।” বাস্তবিকই চরকায় সুতা ভালরূপ পাকান হইত এবং বেশী শক্ত ছিল। এখনকার কলে পাকান স্থতা নিতান্ত আলগী, সুতরাং মাড় ইত্যাদি কৃত্রিম উপায় দ্বারা কাজ করা ভিন্ন উপায় নাই। যদি সে বিষয়ে একটু কট ঘটে, তাহ হইলে কষ্টের একশেষ। আমাদের দেশে পুনরায় চরকার প্রচলন না হইলে এ অভাব কিছুতেই দূর হইবে না