পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বেশ্বর [ مطان ] বিশ্বেশ্বরনাথ একমাত্র কারণ জানিয়া, কি সত্যনিষ্ঠ ধৰ্ম্মপরায়ণ পুণ্যায়, কি সতত নিরয়ভাজন নিরতিশয় পাপায়, এইরূপ সকল প্রকার লোকই যখন মুক্তিপদ লাভে সমুৎসুক হইতে লাগিল,তখন ইন্দ্র, যম ও অগ্নি প্রমুখ দেবগণ বদ্ধপরিকর হইয়া যাহাতে ঐ সকল পাপীদিগের অনায়াসে অবিমুক্তক্ষেত্র প্রাপ্তির পক্ষে বাধা ঘটে সেই জন্য ক্ষেত্রের উত্তর ও দক্ষিণদিকে যথাক্রমে বরণ ও অলি নদীর সৃষ্টি করিলেন । তদবধি তদুভয়েব মধ্যবর্তী কাশীধাম বারাণসী নামে প্রসিদ্ধ হইল। এই ধামের পশ্চাৎ প্রদেশ বক্ষার জন্য স্বয়ং বিশ্বনাথ দেহলী বিনায়ককে তথায় নিযুক্ত করিয়াছেন। এক্ষণে দেখা যাইতেছে যে, একমাত্র নিখিল দয়ানিধি ভগবান বিশ্বেশ্বরেব অপার কৃপা দৃষ্ট না পড়িলে, এই অবিমুক্তক্ষেত্রে প্রবেশ করা নিতান্ত সহজ নছে ; ফলে বাহাই হউক না কেন, স্বয়ং অবিমুকেশ্বরের অনুমতি ব্যতীত যদি কোন দুষ্ট লোক কাশীতে প্রবেশ করিতে যায়, তাহা হইলে অসি, বরণ ও দেহলী বিনায়ক তাহার যাওয়ার পক্ষে ব্যাঘাত জন্মায় । বস্তুতঃ কোন দুষ্টলোক সঙ্গতিক্রমে কাশাপামে যাইতে পারিলেও তথায় কিছুতেই বহুদিন অবস্থান করিতে সমর্থ কোন সময়ে একাদিক্ৰমে ষাট বৎসর পর্য্যস্ত অনাবৃষ্টি ও অরাজকতা-প্রযুক্ত স্বষ্টিনাশের সম্ভাবন হইয়া উঠিলে, প্রজাপতি ব্ৰহ্ম রাজ{ৰ্ষ রিপুঞ্জয়কে প্রজাপলিন জন্ত ধরাবাজ্যে অভিষিক্ত । কলেন তখন রাজা ও প্রতিজ্ঞ করিলেন যে “যদি দেবগণ ও নাগগণ মর্ত্যধাম পরিত্যাগপুৰ্ব্বক স্বর্গে ও পাতালে গমন করেন তাহ হইলে আমি প্রজাপলিনে ব্ৰতী হইতে পারি, নচেৎ নহে" । রিপুঞ্জয়ের এই প্রস্তাবে ব্ৰহ্মা ও সম্মত হন এবং নিজে কাশীধামে গিয়া মহাদেবেব নিকট আমূল বৃত্তাস্ত যথাযথভাবে জ্ঞাপন করেন। পরে ব্রহ্মার মুখে সমস্ত বৃত্তান্ত শ্রবণানন্তর বিশ্বপতি বিশ্বনাথও তাহাতে সন্মত হইয়া কণী পরিত্যাগ পূর্বক স্বয়ং মন্দর-কন্দরে গিয়া অবস্থান করেন এবং বারাণসীতে সাধকগণের সৰ্ব্ব প্রকার সিদ্ধিপ্রদ ও মৃতজীবগণের মুক্তিপ্রদ নিজমূৰ্ত্তিস্বরূপ একটা শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করিয়া যান । দেবাদিদেব মহাদেব স্বয়ং মন্দর পর্বতে গমন করিয়া ও কাশীক্ষেত্রে লিঙ্গরূপে অবস্থিত হইয়া ক্ষেত্রকে আপনার সংসর্গ হইতে বিমুক্ত করেন নাই, এই জন্যই ঐ ক্ষেত্রেরএবং তদীয় প্রতিষ্ঠিত লিঙ্গের নাম ‘অবিমুক্ত' , হয় । অবিমুক্ত ক্ষেত্রে অবিমুক্তেশ্বর লিঙ্গ দর্শন করিলে সমস্ত কৰ্ম্ম-বন্ধ হইতে বিমুক্ত হওয়া যায় । জগতের যাবতীয় পুণ্যক্ষেত্রস্থ লিঙ্গসমূহ মাঘী কৃষ্ণ চতুর্দশীতে অবিমুক্তেশ্বরকে দর্শন করিতে কাশীধামে আগমন করেন ; ঐ দিনে বিশ্বেশ্বরের উদ্দেশে রক্রিজাগরণ করিলে বিগতনিদ্র যোগীগণের ন্যায় উৎকৃঃ গতি লাভ হয় । ( কাশীখণ্ড ) [ বিস্তৃত বিবরণ কাশী ও বারাণসী শব্দে দ্রষ্টব্য বিশ্বেশ্বর, তত্ত্বাৰ্ণৰ গ্ৰন্থপ্রণেতা রাখৰানন্দ সরস্বতীয় পরম গুরু এবং অস্বয়ানদের গুরু । ২ ইনি প্রসিদ্ধ জ্যোতিৰ্ব্বেত্ত কমলাকরের গুরু ছিলেন। ৩ মীমাংসা কৌতুহলবৃত্তি-রচয়িতা বাসুদেব অধ্বরীর গুরু । ৪ একজন কৰি । ৫ অলঙ্কারকুলপ্রদীপ ও অলঙ্কারমুক্তাবলীপ্রণেতা । ৬ অধ্যাত্ম প্রদীপ নামে অষ্টবক্রণীত। টীকা ও গোপাল তাপনীর টীকা রচয়িত । গৰ্গমনোরমা টীকা লামী জ্যোতিগ্রন্থ ও পঞ্চস্বরটক প্রণেতা। ৮ ইনি গৃহপতি,ধৰ্ম্ম নামে একখানি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ৯ ই হার রচিত তর্ককুতূহল নামক একখানি পুস্তকের পরিচয় পাওয়া যায়। ১• দৃগ দৃশুৰিবেক নামক বেদান্ত গ্রন্থপ্রণেতা। ১১ নির্ণয়কৌস্তুভ নামক গ্রন্থ-রচয়িতা । ১২ ইনি ন্যায় প্রকরণ নামক একথানি গ্রন্থ লিখিয়ছেন । ১৩ ভগবদগীতা-ভাষ্য-কার। ১৪ মনোরমাথগু নামক ব্যাকরণ রচয়িত । ১৫ রসচন্দ্রিক নামী অলঙ্কারগ্রন্থ ইহার রচিত। ১৬ রোমাবলীশতক-প্রণেতা। ১৭ লীলাবতু্যদাহরণরচয়িতা । ১৮ ইহার রচিত বিশ্বেশ্বর পদ্ধতি নামী একখানি গ্রন্থ পাওয়া যায়। ১৯ বেদ-পাদস্তব-প্রণেতা। ২০ ইনি শব্দার্ণবসুধা-নিধি নামী একখানি ব্যাকরণ প্রণয়ন করিয়াছিলেন। ২১ শ্রুতিরঞ্জিনী নামী গীতগোবিন্দ টীকাকৰ্ত্ত । ২২ সপ্তশতী-কাব্যের কবি । ২৩ সাহিত্য-সারকাব্য প্রণেতা । ২৪ ইনি সিদ্ধাস্তশিখামণি নাম্নী তন্ত্রগ্রন্থ রচয়িত । ২৫ সন্ন্যাসপদ্ধতি বা বিশ্বেশ্বর-পদ্ধতি নামক গ্ৰন্থরচয়িতা। এই গ্রন্থের আনন্দতীর্থ ও আনন্দাশ্রম রচিত টীকাও পাওয়া যায়। বিশ্বেশ্বর আচাৰ্য্য, ১ কাশীমোক্ষ-প্রণেতা। ২ পদবাক্যার্থপঞ্জিকা নামী নৈষধীয় টকাকৰ্ত্ত ; ইনি মল্লিনাথের পুর্ববৰ্ত্তী । বিশ্বেশ্বর কালী, চমৎকারচন্ত্রিক কাব্য-রচয়িত। বিশ্বেশ্বর তন্ত্র, তন্ত্রভেদ। বিশ্বেশ্বর তীর্থ, ১ সিদ্ধান্ত-কৌমুদীর টাকা কৰ্ত্ত । ২ ঐতরেয়াপনিষদ্ধভাষ্যবিবরণ নামক আনন্দ তীর্থকৃত ভায্যের টীকা-প্রণেতা। বিশ্বেশ্বর দত্ত, রামনাম মাহাত্মা-প্রণেতা। বিশ্বেশ্বরদত্ত মিশ্র, ভাস্করস্তোত্র, যোগতরঙ্গ ও সাংখ্যতরঙ্গ প্রভৃতি গ্রন্থ রচয়িত। ইনি বিদ্যারণ্য তীর্থের শিষ্য ছিলেন। সন্ন্যাসগ্রহণ করিয়া ইনি দেবতীর্থ স্বামিন্‌ নাম ধারণ করেন। ১৮৫২ খৃষ্টাৰো কাশীধামে ইহার দেহান্তর ঘটে । বিশ্বেশ্বর দৈবজ্ঞ, জ্যোতিঃসারসমুচ্চয় রচয়িত । বিশ্বেশ্বর নাথ, হৰ্শনমুখচপেটকা ও ভাগবতপুরাণপ্রামাণ্য নামক দুইখানি গ্রন্থপ্রণেতা।