পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f করিতে পারিলেই যোগী হওয়া যায় । পাতঞ্জলদর্শন যোগ দুই প্রকার জ্ঞানযোগ ও ক্রিয়াযোগ। পূৰ্ব্বে যে 奪 সকল যোগের কথা বলা হইল, তাহা জ্ঞানযোগ ; জ্ঞান যোগের অধিকারী সকলে নহে। যাহাঁদের চিত্ত নিৰ্ম্মল [ ১৯১ হুইয়াছে, তাহারাই জ্ঞানযোগের অধিকারী । যাহাদের চিত্ত- : প্রসাদ না হইয়াছে, তাহারা প্রথমে ক্রিয়াদোগের অম্বুষ্ঠান কবিবে। তপস্ত, স্বাধ্যায় ( বেদাভ্যাস ) ও ঈশ্বর প্রণিধান এই তিন প্রকার ক্রিয়ার নাম ক্রিয়ারোগ। শ্রদ্ধাপুৰ্ব্বক শাস্ত্রোক্ত ব্ৰতাদির অনুষ্ঠান করার নাম তপস্তা, প্রণব প্রভৃতি ঈশ্বরবাচক শব্দের জপ অর্থাৎ অর্থস্মরণপূর্বক উচ্চারণ ও অধ্যা স্মশাস্ত্রের মৰ্ম্মানুসন্ধানে থাকার নাম স্বtধ্যায় এবং ভক্তি শ্রদ্ধাসহকারে ঈশ্বরার্পিতচিত্ত হইয়া কাৰ্য্য করার নাম ঈশ্বর প্রণিধান । এই ক্রিয়যোগই একমাত্র সমাধি হইবার পূৰ্ব্বনিমিত্ত এবং ক্লেশবিনাশের প্রধান কারণ । উক্ত তিন প্রকার অগপ তিন প্রকারের কোন এক প্রকার ক্রিয়াযোগ অবলম্বন করিয়া তাহা অভ্যাস করিতে থাকিলে ক্রমে উহা দৃঢ় হইয়া লাইসে। তখন ক্লেশ সকল ক্ষীণ হইয়া পড়ে এাং সমাধিশক্তিও জন্মে। ক্লেশ কয় প্রকার ? ভগবান পতঞ্জলি তাহার বিষয় এইরূপ বলিয়াছেন,—অবিদ্য, অস্মিতা, রাগ, দ্বেষ ও অভিনিবেশ এই পাচ প্রকার মনেধর্মের নাম ক্লেশ। এই পাচপ্রকার ক্লেশ অযথার্থজ্ঞান বা মিথ্যা জ্ঞান ভিন্ন তার কিছুই নহে, এই মিথ্যা জ্ঞান যাহাতে না বাড়ে, তাহার প্রতি প্রত্যেকেরই যত্নশীল হওয়া উচিত । চিত্তের ক্লেশনামক ধৰ্ম্ম গুলি দগ্ধ ক্লেশের মধ্যে অবিদ্যাই প্রধান । অনিত্য, অশুচি, দুঃখ ও অনাত্ম পদার্থের উপর যথাক্রমে নিতা, গুচি, সুপ ও আত্ম তা (অামি ও আমার ইত্যাকার ) জ্ঞানের নাম অবিদ্যা । ফল কথ। এই যে, যাহা বাহার স্বরূপ নহে, তাহাতে তাহার জ্ঞান হওয়ার নাম অবিদ্যা । এই অবিদ্যাই অন্যান্য ক্লেশসমূহের মুল, এই অবিদ্যা হইতেই অন্যান্ত ক্লেশ উপস্থিত হয় । জীব দেহ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই অবিদ্যার বর্ণ ভূত হইয়া অস্মিতার অধীন হয়। দৃকশক্তি যে দর্শনশক্তির সহিত একীভূতের স্থায় প্রকাশ পায়, উভয়ের এই একীভাব প্রাপ্তির নাম অস্মিত। অtার নাম দৃকৃশক্তি তার বুদ্ধিতত্ত্বের নাম দর্শনশক্তি । চিৎস্বরূপ অী ৷ বুদ্ধিবৃত্তিতে প্রতিবিঙ্গিত হন বলিরা সেই বুদ্ধিবৃত্তি প্রকাশিত হয় । জীবের আপন বুদ্ধিকে বা চি শুকে চৈতন্ত হইতে পৃথকৃরূপে না জানা, অর্থাৎ বুদ্ধির প্রতি সে অক্ষুঃ “আমি জ্ঞান আরোপিত হইয়া আছে, সেই আমি ও আমার ইত্যাকার প্রতীতির নাম অস্মিত । এই অস্মিত হইতে রাগনামক ক্লেশের উৎপত্তি হয়। মুখের অনুশয়ের (অমুকৃত্তির) নাম রাগ । মুখ একবার অনুভব করিলে J পাতঞ্জলদর্শন পুনরায় তাহ পাইবার জন্ত অতিশয় ইচ্ছা হয়। এই অসক্তি বিশেষের নামই রাগ। এই রাগ হইতেই ক্রমে দ্বেষের উৎপত্তি হয়। দুঃখজনক বিষয়ে যে বিদ্বেষভাব, তাহাকে দ্বেষ কহে । এই দ্বেষ থাকাতেই লোকে ক্লেশকর যাগাদিতে প্রবৃত্ত হয় না । চিত্তে এই দ্বেষ বদ্ধমূল হইয়। বর্ধমান থাকাতেই জীব অভিনিবেশের বাধ্য হইয় থাকে । অভিনিবেশের লক্ষণ এইরূপ,— বার বার মরণদুঃখভোগ করায় চিত্তে তত্ত্বাবতের সংস্কার বা বাসনা সঞ্চিত বা বদ্ধমূল হইয়া আদিতেছে । সেই সকল বাসনার নাম স্বরল । সেই স্বারস্ত দ্বারা জ্ঞানী অজ্ঞানী সমুদয় জীবেরই চিত্তে সেই প্রকার ভাব অর্থাৎ অলক্ষ্যরূপে মরণ দুঃখের ছায়া বা স্মৃতি নামক সুগাকার বৃত্তি আরূঢ় হয় । সেই আর বৃত্তির নাম অভিনিবেশ । একবার দুঃখামুম্ভব হইলে সেই সেই দুঃখপ্রদ বস্তুর প্রতি বিদ্বেষ এবং তাছা যtছাতে আর না হয়, তৎপক্ষে চেষ্টা বা ইচ্ছাবিশেষ জন্মে । দুঃখের শেষ মৃত্যু, পূর্ণ পূৰ্ব্ব জন্মে অনুভূত যে অসহ মরণ-খুঃখ, তদ্বসনা বশতঃ অর্থাৎ তাহার স্মরণবশতঃ ইহজন্মে যে কারণভয় উপস্থিত হয়, তাহকে মভিনিবেশ কহে । এই জগতে প্রাণীমাত্রেরই অন্তঃকরণে মভিনিলেশ সৰ্ব্বদা জগন্ধক রছিয়াছে { এই পঞ্চবিধ ক্লেশ ক্রিয়াযোগ দ্বার! একেবারে নষ্ট হয় না বটে, কিন্তু এই ক্রিয়াযোগের অনুষ্ঠানে সুন্ম হইয়া মাসে । যখন ইহারা সুহ্ম হইবে, তখন ইহাদিগকে প্রতিলোমপরিণাম দ্বারা চিত্ত হইতে দুীকৃত করিতে হইবে চিন্তু যৎকালে সমাধি অনলে দগ্ধ হইয়া স্বীয় কারণ অস্মিতায় লীন হইবে, তখন তাহtয় সমস্ত ক্লেশসংস্কার আপন হইতেই তিরোহিত হইবে । ক্লেশের বৃদ্ধি অর্থাৎ সুখ দু:খাদি আকারের পরিণাম কেবল ধ্যান দ্বারাই তিরোহিত হয় । ক্লেশপঞ্চকের বিনাশের জন্ম প্রথমে ক্রিয়ীযোগ এবং পরে ধ্যtণযোগ অবলম্বীয় । এই সকল ক্লেশের মূল কৰ্ম্মাশয়। ইহা দুই প্রকার,-দৃষ্টজন্মবেদনীয় ও অদৃষ্টজন্মবেদনীয়। বর্তমান শরীর দ্বারা কৃত দৃষ্টজন্মবেদনীয় এবং জন্ম গুরীয় শরীরদ্বারা কৃত অদৃষ্টজন্মবেদনীয় । যদি ক্রিয়ালোগ ও ধ্যানযোগাদি দ্বারা ক্লেশসমূহকে দগ্ধ না করা যায়, তাহ হইলে চিরকাল শুভাশুভ কৰ্ম্মে জড়িত থাকিতে হয়। কোন কালেই সমাধি বা মুক্তিলাভ হয় না । যদি ক্লেশ ও রেশমূল কৰ্ম্মাশয় বিশীর্ণ হইয়া যায়, তাহ হইলে সমাধি সমীপবৰ্ত্তী বলিয়া স্থির করিতে হুইৰে । যাহার কোন ক্লেশ নাই, সে কি জন্ত আসক্তিপূর্বক কাৰ্য্য করিবে ? যাহার কোন স্পৃহা নাই, কামনা নাই, রাগ বা দ্বেষ নাই, দ্রব্য বা বিষয়োপলক্ষ্যে তাহfর মনোবিকার বা মুখ দুঃখই বা হইৰে কেন ? যাহার কোন উদ্বেগ নাই, দ্রব্যের অভাব বা অপ্রাপ্তিত্তে