বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৰ্ব্বত কঠিন প্রস্তরে পরিণত হইয়াছে। সেই মুক্তিকানিহিত জীবদেহও ক্রমশঃ মুক্তিকার সহিত প্রস্তরে রূপান্তরিত দৃষ্ট হইলেও তাহার পূর্বতুন আকৃতি ভ্ৰষ্ট হয় না। ঐ সমস্ত জীবকঙ্কাল প্রাপ্ত হইলে কালের অনস্তত্ব এবং জগন্ধ্যাপ্তির অসীমত্ব নির্ণত হয় । যেমন পৰ্ব্বতমধ্যে নানাজাতীয় পদার্থ বিদ্যমান আছে, অন্ধপ উপরিভাগও নানা প্রকার জীবজন্তু ও বৃক্ষাদিতে ८*ांउठमांन ! পৰ্ব্বতের উপরিদেশে মানাজাতীয় হিংস্র ও শাস্তস্বভাব পশু, সরীস্বপাদি, নানাবর্ণেরঞ্জিত পক্ষ্যাদি এবং শাল, তমাল চম্বন প্রভৃতি মূল্যবান বৃক্ষ ও ওষধিসমূহ জঙ্কিতে দেখা যায়। এতদ্ভিন্ন উপত্যকাদিতে হ্রদাকার জলরাশি মধ্যে মৎস্ত এবং উভয় তীরবর্তী সমতলস্তরে (Terraces) নানাশস্তের চাষবাস হইয়া থাকে। পৰ্ব্বতগাত্র বহিয়। স্রোতস্বিনী সকল ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়াছে। কতশত স্রোতঃমালা প্রকৃষ্ট নদীর আকারে নানা দিদেশে প্রবাহিত হইয়৷ তৎতীরবর্তী ভূমিসমূহ উৰ্ব্বর করিতেছে। নদীর প্রবহমাণ মৃৎকণা সকল (Sediments ) জলবাধে রুদ্ধ হইয়া সঞ্চিত হইতে থাকে, উহা ক্রমশঃ পলি পড়িয়া ‘ব’ দ্বীপে পরিণত হয় । নদীস্রোতে স্বল্প স্বগ্ন বালুকাকণা জমিয়া যেরূপ মৃত্তিক, পরে দ্বীপ ও নগরে পর্যবসিত হয়, তদ্রুপ অনন্তকালব্যাপী ভূমির অদৃষ্টে কখন কি পরিবর্তন ঘটি. তেছে কে বলিবে । এই স্বল্পজগতে অণু পরমাণু সকল কালের অনন্তস্রোতে ভাসমান হইয়া এবং প্রাকৃতিক বিবর্তনে পরিভ্ৰমিত হইয়া পুনঃ পুনঃ পরিবর্তন ও রূপান্তর গ্রহণে পরিদর্শক জগৎবাসীকে নূতন আলোক প্রদান করিতেছে। কে বলিতে পারে, আজি যাহা সাধারণ সমক্ষে পৰ্ব্বত বলিয়া প্রতীয়মান হইতেছে, কলা তাহ কি ছিল ? [ &b-. ) পদার্থতত্ত্ববিৎ সকলেই বলিয়া থাকেন, জল জগতের প্রথম । সৃষ্ট পদার্থ। যুরোপীয় বৈজ্ঞানিক পণ্ডিতগণও এ কথা স্বীকার করেন। স্রষ্টা প্রথমে জল স্বষ্টি করিলেন, ক্রমে তাহ হইতে মৃত্তিকার উদ্ভব হইল। ইহাতেই পৃথিবীর স্বষ্টি । তেজ হইতে স্বৰ্য্য, স্বৰ্য্য হইতে উত্তাপ, জল হইতে উত্তাপসংযোগে বাষ্প, বাষ্পসমষ্টি হইতে দেখ, মেঘ গাঢ় হইলে জল । প্রকৃতির আবর্তন ঠিক এইরূপ। পৃথিবী একবার যেরূপ আপনার পথে আপনি ঘুরিলে দিনরাত্র হয় এবং ৩৬৫ দিনে স্বৰ্য্যকে পরিবেষ্টন করিলে বৎসর হয় ; তদ্রুপ ঈশ্বরের ইচ্ছার পরিবর্তনে জল, জল পরিপত্ত্বিত হইয়া মাটী ও বাষ্প হয় । অপর দিকে মুক্তিক ভেদ করিয়৷ উদগত জলরাশি কোথাও প্রস্রবণ, কোথাও হ্রদ, কোথাও বা নদীর আকার লইয়া প্রবাহিত হইতেছে। পূৰ্ব্বে লিখিত হইয়াছে, জল হইতে মুক্তিক উদ্ভূত পৰ্ব্বত । - _ হইয়াছিল, এখন আবার সেই প্রাকৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটতেছে। প্রবহমাণ নদী জলের গতি দ্বারা যে পথ ঝর্তন করে, সেই খাতের উভয় পাশ্ববর্তী ভূমি জলস্রোতে ৰিধেীত হইয়। ক্ষয় প্রাপ্ত হইতে থাকে। নিম্নাভিমুখে গমনশীল এই জলস্রোত যদি কোমল মুক্তিকার অভাবে দৃঢ় মুক্তিক বা পৰ্ব্বতগাত্রে আলিয়া স্পর্শ করে, তাহ হইলে ক্ষণকালের জন্ত জলের গতি রুদ্ধ হইয়া পুনরায় বক্রগতিতে আপনার পথ বাহির করিয়া লয় । কিন্তু যখন জল পৰ্ব্বতগাত্র বাহিয়া গমন করে, তখন দেখা যায়, পৰ্ব্বতগাত্র ধৌত হইয়া বালুকাকণ জলস্রোতে ভিন্ন স্থানে প্রবাহিত হইয়া স্থিত হয়। ক্রমে ঐ নবনীত বালুক জল ও মুক্তিক সহযোগে দৃঢ়ীভূত হইতে থাকে। জলাঘাতে চুর্ণীকৃত পৰ্ব্বতগাত্র যেমন বালুকায় পরিণত হয়, সেইরূপ ঐ বালুকারাশিও কালে প্রকৃতি বশতঃ প্রস্তরবৎ কঠিন হইয়া থাকে। নদীগর্ভে পলি ( Silt ) পড়িয়া যেমন ‘ব’ দ্বীপের উৎপত্তি হয়, পুথিবীর মৃত্তিকার উপরেও তদ্রুপ বৎসরে বৎসরে পলি পড়িয়া এক একটা মুক্তিকাস্তর ( Strata or bed ) জন্মাইয়া দেয়। মুত্তিকাগর্ভে সময়ে সময়ে কোন দৈব বিপর্যায়ে নিহিত বনরাজী যেরূপ মুত্তিক ও জলদি সহযোগে দৃঢ় হইয়া কিয়লায়’ রূপান্তরিত হয়, সেইরূপ মুক্তিকার পলিও কোন অভাবনীয় রসে সিক্ত হইয়া কালে ভিন্নাকৃতি প্রাপ্ত হইয় থাকে। কোন পৰ্ব্বতের সম্মুখস্থ সমস্ত ভূমি হইতে পাৰ্ব্বতীয় উচ্চভূমি পর্যন্ত বিশেষরূপে পর্যবেক্ষণ করিলে জানিতে পারা যায় যে, বিভিন্ন সময়ে নিহিত মুক্তিকাস্তর ভূগর্ভস্থ আভ্যস্তরিক প্রক্রিয়ানুসারে ক্রমে দৃঢ় হইতে দৃঢ়তর আকারে পরিণত হইতেছে। কারণ পাৰ্ব্বতীয় দেশস্থ সমতল ক্ষেত্রাদি খনন করিলে যতই নিম্নাভিমুখে বালুকামিশ্রিত মুক্তিকারাশি বাহির হইতে থাকে, ততই বিভিন্ন প্রকার প্রস্তরের স্তর পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। এইরূপে স্থানবিশেষে কোথাও বালুপাথর ( Sand-stone), কোথাও চুণাপাথর ( Limestone ), otofs ot-tūtā (Granite), Cotote বউলমাল, কোথাও শ্লেট ( Slate ) প্রভৃতি নানাজাতীয় প্রস্তরস্তর পাওয়া যায়। উপরি উক্ত মৃত্তিকাসংযুক্ত অথবা দৃঢ় প্রস্তরময় বালি, বালুপাথর, লোম' ( Loam ) জীব দেহ ও উদ্ভিজ্যাদি জড়িত প্রস্তরীভূত মৃত্তিক ও বালি, দৃঢ় কর্দম বা চুণা-পাথরকে ভূতত্ত্ববিদগণ পাৰ্ব্বতীয় স্তর ( Stratified rocks ) বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। এই সকল মৃত্তিকানিহিত দৃঢ়-স্তরাঙ্কতি ভূমাংশ দেখিলে অম্বুমান হয়,