পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্ব, $. বারুইরা বৈশাখ চতুর্থীতে কুলদেবীর পূজা করে। পূৰ্ব্ববঙ্গে লাক্ষানদীতীরে বারুইগণ আশ্বিনী কৃষ্ণানবমীতে উধার পূজা করে। এই পূজায় ব্রাহ্মণের আবগুক হয় না, তাহারা নিজ নিজ উপহার দেবীকে উৎসর্গাস্তে গ্রামস্থ বালকবালিকাদিগকে প্রদান করে । বিক্রমপুরবাসী বারুইগণ ব্রাহ্মণের সাহায্য ব্যতীত সুঙ্গাই নামক ভগবতীমূৰ্ত্তির উপাসনা করিয়া থাকে। পাণ উৎপন্ন করাই ইহাদের জাতীয় ব্যবসা। বায়ু ও স্বর্ঘ্যের প্রকোপ হইতে পর্ণলতা রক্ষার জন্য নল, পাকাটী অথবা বাখারি দিয়া বিরোজ প্রস্তুত করে। ঐ বরোজ গুলি সাধারণতঃ ৮ ফিটু উচ্চ হয় এবং দীর্ঘ ও প্রস্থে জমির সমান । পাণলতার নীচে পাকমাটি ও খোলের সার দিতে হয়। লতার ডাল যতই কাট হয়, গাছও ততই বাড়িয় উঠে। ফাল্গুন ও আষাঢ় মাসে নূতন পত্র গজায়। উহাই ফাল্গুনে ও আষাঢ়ে নোচ নামে খ্যাত। কপূর ( কপূরগন্ধযুক্ত ), সাঁচি (ছাচি), কড়ই, দেশী, বাঙ্গাল, ভাটিয়াল, ধালদোপ্গ, বুর্ন ও ঘাস পাণ নামক স্বতন্ত্র শ্রেণীর পাণ বাঙ্গালার বিভিন্ন জেলায় উৎপন্ন হয় । বারুইগণ স্নানন্তে গুচি হইয়া বরোজ মধ্যে প্রবেশ করে। যে কৃষকের পর্ণক্ষেত্রে কৰ্ম্ম করে, তাহদেরও স্নান ব্যতিরেকে বরোজের ভিতর প্রবেশ করিতে দেওয়া হয় না । লাভের প্রত্যাশায় অধুনা ধোবা, চণ্ডাল, কৈবর্ত, শুড়ি প্রভৃতি নিয় শ্রেণীর হিন্দু এবং মুসলমানগণ পাণের চাষ করিতেছে ; কিন্তু তাহারা বাঞ্চুইদিগের মত বরোজের পবিত্রত রক্ষা করে না আবশুকমত কোনরূপ পূজাদিও করে না। এই বারুইগণ নবশাখের অন্তর্গত । বর্তমানকালে শিক্ষণপ্রভাবে অনেকের সামাজিক ও সাংসারিক উন্নতি দেখা যায়। অনেকে শিক্ষক, রাজকৰ্ম্মচারী প্রভৃতির কার্য্য করিতেছে । গবমেন্টের অধীনেও অনেকে কেরাণীর কার্য্যে লিপ্ত আছে । ইহাদের বংশোপাধি—আইন, আশ, বয়াল, ভদ্র, ভৌমিক, ভাবল, বিশ্বাস, চাদ, চৌধুরি, দাম, দাস, দেব, দত্ত, ধর, গুহ, হালদার, হেড়ি, কর, খান খের, কুধু, লাহা, মজুমদার, মল্লিক, মণ্ডল, মন্ত্ৰিণী, মল্লা, মাল্লিক, মিত্র, লাহা, নাগ, নন্দন, ননী, পাল, রক্ষিত, রুদ্র, সরকার, সেন প্রভৃতি । বেহার ও বারাণসীবাদী বারুইদিগের সহিত তথাকরি তাম্বলীদিগের কোন বিশেষ প্রভেদ লক্ষিত হয় না। এখানে এই জাতির উৎপত্ত্বি সম্বন্ধে অভিনব প্রবাদ প্রচলিত আছে। দুইজন ধাৰ্ম্মিক ব্ৰাহ্মণদাতা একদা বনমধ্যে তৃষ্ণাতুর T ఆ ఖా J. হইয়া জলাম্বেষণ জন্ত ইতস্তত: ভ্রমণ করিতে থাকে। তৎপরে জ্যেষ্ঠের আদেশে কনিষ্ঠভ্রাতা একটী মহুয়া বুক্ষের উপরে উঠিয়া | কোটর মধ্যে জল পায় ; কিন্তু ভ্রাতাকে গোপন করিয়া সেই | বারু হ পুর W2 জল পানপূর্বক বৃক্ষ হইতে অবতরণ করে। এই মিথ্যাকথার জন্ত পরমেশ্বরের আদেশে কনিষ্ঠের উপবীত হইতে পাণলতার স্বষ্টি হয়। তদবধি ঐ কনিষ্ঠের সস্তানসস্তুতিগণ পাণের ব্যবসা করিতেছে। কেহ কেহ বলেন, ব্ৰহ্ম ব্রাহ্মণদিগকে পাণচাষ হইতে বিরত করিবার জন্য এই জাতির স্বষ্টি করিয়াছেন। অপরে বলিয়া থাকেন, বৈশ্বের ঔরসে শূদ্রাণীর গর্ভে তালিকের জন্ম হয়। গোরখপুরের বারুইগণ বলে যে, পর্ণবিক্রয়বৃত্তি হইতে তাহার এই নামে অভিহিত হইতেছে । আজমগড়ের অস্তুগত রভানপুর তাছাদের পৈতৃক বাসস্থান। পশ্চিম বারুইদের মধ্যে প্রায় ১৪৭ট থাক আছে। এগুলি স্থানবাচক। যেমন অহরবাড়, অযোধাবাসী, বৃন্দাবনবাসী, সবযুপুরী, চৌরাসিয়া, শ্ৰীবাস্তব, উত্তরাহ, পৰ্ব্বতগড়ী, জৈসবার, জৌনপুরী ইত্যাদি। পিতৃকুল, মাতৃকুল এবং পিলী ও মাসীর ংশে যতদিন পিগু বাধে, ততদিন বিবাহ নিষিদ্ধ । ইহার কস্তার ৮ বা ৯ বৎসরে এবং বালকের ১২ বা ১৩ বর্ষেই বিবাহ দেয় । দ্বিতীয় দারপরিগ্রহ করিতে হইলে জাতীয় সভায় তাহার কারণ আবেদন করিতে হয় ; কিন্তু দুইটী ব্যতীত কাহারও তৃতীয় স্ত্রী গ্রহণ করিবার নিয়ম নাই । ইহাদের মধ্যে তিন প্রকার বিবাহ প্রচলিত। ধনীর পক্ষে চারহোবা, গরিবের দোলা এবং বিধবা রমণীগণের সাগাই। উপরোক্ত দুইটা কুমারাবিবাহে সিন্দূরদান বিহিত আছে। ইহার সাধারণতঃ কোন ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ভুক্ত নহে। মহাবীর, পাচপীর, ভবানী, হরদিহু দেব, শোথবাবা ও লাগবেলি ইঙ্কদের প্রধান উপাস্ত-দেবতা। প্রধান প্রধান দেবপূজায় তেওয়ারা ব্রাহ্মণগণ ইহাদের যাজকতা করে ; কিন্তু গ্রাম্যদেবতার পূজা গৃহস্থগণ স্বয়ং সমাপন করিয়া থাকে। ইহার শবদেহ দাহ কলে, কেহ কেহ গয়ায় গিয়া পিণ্ডদান ও শ্রাদ্ধাদি করিয়া ও থাকে । ব্ৰাহ্মণক্ষত্রিয় ও বৈপ্তের নিকট ইহার মাথহণ করে । ঘাঁটিয়া ব্রাহ্মণ ও রাজপুতগণ ইহাদের প্রস্তুত পঞ্চান্ন ভক্ষণ করিতে পারে। ইহারা মস্ত ও মাংস খায়। বারুইপুর, ২৪ পরগণার একটা উপবিভাগ। ভূপরিমাণ ৪৪২ বর্গমাইল। এখানে পূৰ্ব্ববঙ্গীয় রেলপথের দক্ষিণশাখা বিস্তৃত হওয়ায় ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে বিচারবিভাগ আলিপুর সদরে পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে। ২ উক্ত জেলার একটি নগর । কলিকাতার ৮ ক্রোশ দক্ষিণে আদিগঙ্গা নামক গঙ্গাখাতের পূর্বকুলে অবস্থিত। অক্ষা ২২° ২১ ৬০% উঃ এবং দ্রাঘি” ৮৮° ২৯ পূঃ । টলিসাহেব কর্তৃক গোড়ের খাল কাটা হইবার পর ঐ নদীখাত শুকু হষ্টয়া গিয়াছে। এখনও ঐ নদীগর্ভস্থিত পুষ্করিণী গুলি গঙ্গা নামে