পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বপরিচয়

বিকিরণ ক’রে তখনি তারা মিলিয়ে যাবে। এতে যে প্রচণ্ড তেজের উদ্ভব হয় তা কল্পনাতীত।

 এইরকম কাণ্ডটাই ঘটছে নক্ষত্রমণ্ডলীর মধ্যে। সেখানে বস্তুধ্বংসের কাজ চলছে বলেই অনুমান করা সংগত। এই মত অনুসারে সূর্য তিনশো ষাট লক্ষ কোটি টন ওজনের বস্তুপুঞ্জ প্রত্যহ খরচ করে ফেলছে। কিন্তু সূর্যের ভাণ্ডার এত বৃহৎ যে আরো বহু বহু কোটি বৎসর এইরকম অপব্যয়ের উদ্দামতা চলতে পারবে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের আয়ু, সম্বন্ধে যে শেষ হিসেব অবধারিত হয়েছে সেটা মেনে নিলে বস্তুভাঙনের চেয়ে বস্তু-গড়নের মতটাই বেশি খাটে। যদি ধরে নেওয়া যায় যে একসময়ে সূর্য ছিল হাইড্রোজেনের পুঞ্জ, তাহলে সেই হাইড্রোজেন থেকে হেলিয়ম গড়ে উঠতে যে তেজ জাগবার কথা সেটা এখনকার হিসাবের সঙ্গে মেলে।

 অতএব এই বিশ্বজগৎটা ধ্বংসের দিকে, না, গড়ে ওঠবার দিকে চলছে, না, দুই একসঙ্গে ঘটছে সে-সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের মতের মিল হয়নি। কয়েক বৎসর হোলল যে বিকিরণশক্তি ধরা পড়েছে যার নাম দেওয়া হয়েছে কমিক রশ্মি সেটার উদ্ভব না পৃথিবীতে না সূর্যে, এমন কি, না নক্ষত্রলোকে। নক্ষত্র-পরপারের কোনো আকাশ হতে বিশ্বসৃষ্টির ভাঙন কিংবা গড়ন থেকে সে বেরিয়ে পড়েছে এইরকম আন্দাজ করা হয়েছে।

৮০