পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূলোক

তার গতিবেগ এক সেকেণ্ডে আধ মাইলের বেশি নয়। পৃথিবী ঘোরে সেকেণ্ডে উনিশ মাইল। আপন মেরুদণ্ডের চারদিকে ঘুরতে চাঁদের একমাসের সমানই লাগে। তার দিন আর বৎসর চলে একই রকম ধীর মন্দ চালে।

 চাঁদের ওজন থেকে হিসেব করা হয়েছে যে কোননা জিনিসের গতিবেগ যদি সেখানে সেকেণ্ডে দেড় মাইল হয় তা হোলে চাঁদের টান অগ্রাহ্য করে তা ছুটে বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। চাঁদ যে-নিয়মে অতিমাত্রায় বোদ পোহায় তাতে তার তেতে ওঠা পিঠের উপরে হাওয়া অত্যন্ত গরম হয়ে ওঠাতে চাঁদ তার বাতাসের অণুদের ধরে রাখতে পারেনি, তারা সবাই গেছে বেরিয়ে। যেখানে হাওয়ার চাপ নেই সেখানে জল খুব তাড়াতাড়ি বাষ্প হয়ে যায়। বাষ্প হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জলের অণু গরমে চঞ্চল হয়ে চাঁদের বাঁধন ছাড়িয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। জল হাওয়া যেখানে নেই সেখানে কোনো রকমের প্রাণ টিঁকতে পারে বলে আমরা জানিনে। চাঁদকে একটা তালপাকানো মরুভূমি বলা যেতে পারে।

 রাতের বেলায় যাদের আমরা খসে-পড়া তারা বলি সেগুলো যে তারা নয় তা আজ আর কাউকে বলতে হবে না। সেই উল্কাপিণ্ডগুলো পৃথিবীর টানে দিনরাত লাখো লাখো পড়ছে পৃথিবীর উপর। তার অধিকাংশই বাতাসের ঘেষ লেগে জ্বলে উঠে ছাই হয়ে যাচ্ছে। যেগুলো বড়ো আয়তনের,

১১৫