বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wor বিষবৃক্ষ কে হয় হউক। তা বন রাগ করিসূ কেন ? মরিতে ভ হবেই এক দিন—যম ও আর তোকেও ভূলবে না, আমাকেও ভুলবে না। হীরা। তোমাকে যেন প্রাতর্বাক্যে কখনও না ভোলে। তুমি আমার হিংসায় মর! ভূমি যেন হিংসাতেই মর। শীগগির অল্পাই যাও, নিপাত যাও, নিপাত যাও, নিপাত যাও । তুমি যেন ছুটি চক্ষের মাথা খাও ! কৌশল্য। আর সহ করিতে পারিল না। তখন কৌশল্যাও আরম্ভ করিল, “তুমি ছুটি চক্ষের মাথা খাও! তুমি নিপাত যাও ! তোমায় যেন যম না ভোলে। পোড়ারমুখি । আবাগি । শতেক খোয়ারি।” কোন্দল-বিদ্যায় হীরার অপেক্ষ কৌশল্য পটুতরা। সুতরাং হীরা পাটকেলটি খাইল । হীরা তখন প্রভুপত্নীর নিকট নালিশ করিতে চলিল। যাইবার সময় যদি হীরার মুখ কেহ নিরীক্ষণ করিয়া দেখিত, তবে দেখিতে পাইত যে, হীরার ক্রোধলক্ষণ কিছুই নাই, বরং অধরপ্রাস্তে একটু হাসি আছে। হীরা সূৰ্য্যমুখীর নিকট যখন গিয়া উপস্থিত হইল, তখন বিলক্ষণ ক্রোধলক্ষণ–এবং সে প্রথমেই স্ত্রীলোকের ঈশ্বরদত্ত অস্ত্র ছাড়িল অর্থাৎ কাদিয়া দেশ ভাসাইল । স্বৰ্য্যমুখী নালিশী আরজি মোলাহেজ করিয়া, বিহিত বিচার করিলেন। দেখিলেন, হীরারই দোষ। তথাপি হীরার অনুরোধে কৌশল্যাকে যৎকিঞ্চিৎ অমুযোগ করিলেন। হীরা তাহাতে সন্তুষ্ট না হইয়া বলিল, “ও মাগীকে ছাড়াইয়া দাও, নহিলে আমি থাকিব না।” তখন , সূৰ্য্যমুখী হীরার উপর বিরক্ত হইলেন। বলিলেন, “হীরে, ভোর বড় আদর বাড়িয়াছে ! তুই আগে দিলি গাল—দোষ সব তোর–আবার তোর কথায় ওকে ছাড়াইব ? আমি এমন অন্তার করিতে পারিব না—তোর যাইতে ইচ্ছা হয় যা, আমি থাকিতে বলি না।” হীরা ইহাই চায়। তখন “আচ্ছা, চল্লেম” বলিয়া হীরা চক্ষের জলে মুখ ভাসাইতে ভাসাইতে বহিৰ্ব্বাটতে বাবুর নিকট গিয়া উপস্থিত হইল। বাবু বৈঠকখানায় এক ছিলেন—এখন একাই থাকিতেন। হীরা কাদিতেছে দেখিয়া নগেন্দ্র বলিলেন, “হীরে, কঁাদিতেছিস্ কেন ?” হী। আমার মাহিনা পত্র হিসাব করিয়া দিতে হুকুম করুন। ন। (সবিস্ময়ে ) সে কি ? কি হয়েছে ?