পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
১৫

বক্ষঃস্থলে পয়সা পরিমিত একটী কালো বর্ণের গোলাকার চিহ্ন দৃষ্টিগোচর হইল। উহা কিসের চিহ্ন, তাহা ভাল করিয়া দেখিলে বুঝিতে পারিলাম, উহা একটী লৌহ পেরেকের গোলাকায় শেষ অংশ। বোধ হইল, ঐ পেরেকটী জোরপূর্ব্বক উহার বক্ষঃস্থলে বসাইয়া দেওয়া হইয়াছে; কিন্তু ঐ স্থান দিয়া রক্তাদি বহির্গত হইবার এরূপ কোন চিহ্ন পরিলক্ষিত হইল না। অঙ্গুলির দ্বারা ঐ পেরেকটী আস্তে আস্তে উঠাইবার চেষ্টা করিলাম। দেখিলাম, উহা উত্তমরূপে সংবিদ্ধ রহিয়াছে। বিশেষরূপ জোর করিয়া না উঠাইলে উহা সহজে দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইবে না। সুতরাং উহা উঠাইবার আর চেষ্টা না করিয়া যেরূপ অবস্থায় উহা দেহের সহিত সংবিদ্ধ ছিল, সেইরূপ অবস্থাতেই রাখিয়া দিলাম। এখন বুঝিতে পারিলাম, রসিকের বক্ষস্থলে ঐ লৌহ পেরেক প্রবিষ্ট হইবার নিমিত্তই তাহার মৃত্যু ঘটিয়াছে। বিসূচিকা রোগে উহার মৃত্যু হয় নাই বা কেবলমাত্র এক চপেটাঘাতেই উহার ইহজীবন শেষ হয় নাই।

 রাজচন্দ্র দাসঘাষ সেই সময় আমাদিগের সহিত সেইস্থানে উপস্থিত ছিলেন এবং আমাদিগের ন্যায় ঐ লৌহপেরেক তিনিও সেই মৃতদেহে স্বচক্ষে দর্শন করিলেন। তখন আমি তাঁহাকে কহিলাম, যদি আপনার একটামাত্র চপেটাঘাতেই ইহার মৃত্যু হইয়া থাকে, তাহা হইলে ইহার বক্ষঃস্থলে এই লৌহপেরেক কিরূপে বিদ্ধ হইল? আমার বোধ হয়, কেবলমাত্র চপেটাঘাতে ইহার মৃত্যু হয় নাই, ইহার বক্ষঃস্থলে এই লৌহপেরেক প্রবিষ্ট হইয়াই ইহাকে ইহজীবন পরিত্যাগ করাইয়াছে। এ সম্বন্ধে আপনি এখন কি বলিতে চাহেন? যদি এই লৌহপেরেক আপনার