পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
৩৯

দিগকে দেখাইয়া দিয়াছিল, সেই স্থানের প্রত্যেক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, কিন্তু তাহারা কেহই ঐ স্থানে রসিকের মৃতদেহ দর্শন করে নাই বা কোনরূপ গোলযোগও শ্রবণ করে নাই। সুতরাং আমরা একরূপ স্থির করিয়াই লইয়াছিলাম যে, রাজচন্দ্রের কথা মিথ্যা, ঐ স্থানে কোনরূপ গোলযোগ হয় নাই বা রসিকের মৃত্যুও ঐ স্থানে হয় নাই। কিন্তু ইহা স্পষ্টই বুঝিতে পারিয়াছিলাম যে, রাজচন্দ্র দাস এই হত্যা-রহস্যের কিছু কিছু অবগত আছে, ও কোনরূপ বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করিবার মানসে সে থানায় গিয়া আত্মসমর্পণ করিয়াছিল। কিন্তু তাহার সেই উদ্দেশ্য যে কি, তাহা কিছুতেই অবগত হইতে পারিলাম না।

 রাজচন্দ্র দাস সম্বন্ধে বিশেষরূপ অনুসন্ধান করা হইল, কিন্তু তিনি যাঁহার যাঁহার নিকট পরিচিত, তাঁহারা সকলেই একবাক্যে কহিলেন, রাজচন্দ্র দাস অতি নিরীহ ভদ্রলোক, কাহারও সহিত তাঁহার কোনরূপ কলহ বিবাদ কেহ কখন দেখে নাই, বা তাঁহার যে কোন শত্রু আছে, তাহাও কেহ অবগত নহেন, তিনি সকলের নিকট প্রিয় ও সকলেই তাঁহাকে ভালবাসিয়া থাকে।

 রাজচন্দ্র দাসের বাড়ীতে স্ত্রীলোকের মধ্যে কেবলমাত্র তাঁহার স্ত্রী বাস করিয়া থাকেন। তাঁহার চরিত্র সম্বন্ধে গোপনভাবে বিশেষরূপ অনুসন্ধান করা হইল, কিন্তু তাঁহার বিপক্ষে কাহারও মুখ দিয়া একটী কথাও বাহির হইল না; অধিকন্তু তাঁহার চরিত্র সমস্ত স্ত্রীলোকের আদর্শস্থানীয় বলিয়া সকলেই তাঁহার ভূরি ভূরি প্রশংসা করিতে লাগিল। যে পর্য্যন্ত এই মোকদ্দমার অনুসন্ধান চলিতে লাগিল, রাজচন্দ্র দাস সেই পর্য্যন্ত হাজত-গৃহে