পাতা:বিষাদ-সিন্ধু - মীর মোশার্‌রফ হোসেন.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বিষাদ-সিন্ধু জীবনী
জীবনী

‘প্রভাকর গ্রামবার্তা’ কুমারখালির ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' প্রভৃতি তৎকালীন পত্রিকা নিয়মিতভাবে লিখিতেন। মীর সাহেবের দ্বিতীয় উপাদেয় গ্রন্থ “গাজী মিয়ার বস্তানী”। বাংলা ১৩০ সালের আশ্বিন মাসে ৪০০ শত পৃষ্ঠার এই বৃহৎ বইখানি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। অনেকের ধারণা তৎকালীন পূর্ববঙ্গের কোন এক বিখ্যাত মোছলমান জমিদার পরিবারের সহিত এই বইয়ের বিষয়বস্তুর নাকি অনেকটা সম্বন্ধ রহিয়াছে। তবে গাজী মিয়। যে কে, গ্রন্থকার সে রহস্য গােপন রাখিয়া কাজ উদ্ধার করিয়াছেন। “গাজী মিয়ার বস্তানী” উপন্যাসের ছাঁচে লেখা, ইহাতে নাই, এমন জিনিষ ও বিষয় দুল্লভ। পড়িতে পড়িতে মনে হইবে আমাদের সকলকে লক্ষ্য করিয়াই বুঝি বইখানি লিখিত হইয়াছে, সমস্ত দুর্নীতি এবং অনাচারের বিরুদ্ধে গাজী মিয়”। কশাঘাত করিয়া- ঠুেন— —এই কশা প্রত্যেকের পিঠে পড়িয়াছে । “গাজী মিয়ার বস্তানীর” ভাষা, ভাব এবং কাহিনীবিন্যাস-কৌশল অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী। দুঃখের বিষয়, এই অমূল্য শিক্ষামূলক বইখানির প্রকাশ বন্ধ হইয়া গিয়াছে। সমাজের তীব্র অসন্তোষ বোধ হয় ইহার কারণ। মীর সাহেবের “গাে-জীবন,” “উদাসীন পথিকের মনের কথা,” “মোসলেম বীরত্ব” “হজরত বেলালের জীবনী” “বিবি কুলসুম” প্রভৃতি পচিশখানি পুস্তকের প্রচার আর নাই। তিনি আমার জীবনী” নামক এক সুবৃহৎ আত্মজীবনী লিখিয়া গিয়াছেন। ৪১৫ পৃষ্ঠা পূর্ণ ১২ খণ্ডে ইহা প্রকাশিত হইয়াছিল। ১৯০৮ খ্রীষ্টাব্দে প্রথম খণ্ড এবং ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দে শেষ খণ্ড প্রকাশিত হয়। দুঃখের বিষয়, এই বইখানিও কোথাও এখন আর দেখিতে পাওয়া যায় না। মােটকথা—এক “বিষাদ-সিন্ধু”ই মীর সাহেবের সমস্ত প্রতিভা ও সাহিত্য-সাধনাকে জাগ্রত রাখিয়াছে। “বিষাদ-সিন্ধু”র প্রত্যেকটি তরঙ্গ-লহরী আজিও তঁাহার জয়গান করিতেছে। বাঙলা ১৩১৮ সালে মীর মোশারফ হােসেন পরিণত বয়সে পরলােক গমন করেন। —প্রকাশক