মোহাম্মদ হানিফা বলিলেন, “হায়! জীবিত থাকিতেই ভ্রাতা হাসানেয় মৃত্যু-সংবাদ শুনিতে হইল। তা হোসেনও কারবালা-প্রান্তরে সপরিবারে কষ্টে পড়িয়াছেন! হায়! এত দিন না জানি কি ঘটনাই ঘটিয়া থাকিবে! জগদীশ! আমার এই প্রার্থনা, দাসের এই প্রার্থনা,—কারবালা প্রান্তরে যাইয়া যেন ভ্রাতার পবিত্র চরণ দেখিতে পাই, পিতৃহীন কাসেমের মুখখানি যেন দেখিতে পাই। দয়াময়! আমার পরিজনকে রক্ষা করিও, দুরন্তু কারবালা প্রান্তরে তুমি ভিন্ন তাহাদের সহায় আর কেহ নাই। দয়াময়! দয়াময়!! আমার মনে শান্তি দান কর। আমি স্থির মনে অটলভাবে যেন কারবালায় গমন করিতে পারি—পূজ্যপাদ ভ্রাতার সাহায্য করিয়া কৃতার্থ হইতে পারি। দয়াময়! আমার শেষ ভিক্ষা এই যে, তোমার এ চিরকিঙ্করের চক্ষু কারবালা প্রান্তসীমা না দেখা পর্যন্ত হোসেন-শিবির শত্রুর আক্রমণ ইতে রক্ষা করিও।”
এই প্রকারে উপাসনা করিয়া মোহাম্মদ হানিফা তাহার সৈন্যগণকে প্রস্তুত হইতে আদেশ করিলেন। তিনি আরও বলিলেন, “আমার সঙ্গে কারবালায় যাইতে হইবে। আমি এ নগরে আর ক্ষণকালের জন্যও থাকিব না। রাজকার্য্য প্রধান মন্ত্রীর হস্তে ন্যস্ত থাকিল।”
মোহাম্মদ হানিফা ঈশ্বরের নাম করিয়া বীরসাজে সজ্জিত হইলেন। যুদ্ধবিদ্যাবিশারদ গাজী রহ্মাকে প্রধান সৈন্যাধ্যক্ষ-পদে বরণ করিয়া তিনি কারবালাভিমুখে যাত্রা করিলেন। কাসেদ সঙ্গে সঙ্গে চলিল।
সপ্তম প্রবাহ
তোমার এ দুর্দ্দশা কেন? কোন্ কুক্রিয়ার ফলে তোমার এ দশা ঘটিয়াছে? যখন পাপ করিয়াছিলে, তখন কি তোমার মনে কোন কথা উদয় হয় নাই। এখন লোকালয়ে মুখ দেখাইতে এত লজ্জা কেন? খোল, খোল, মুখের আবরণ খোল; দেখি,—কি হইয়াছে। চিরপাপ পাপ-পথে দণ্ডায়মান হইলে হিতাহিত জ্ঞান অণুমাত্রও তাহার অন্তরে