বীরবলের চিঠি মহারাজা শ্ৰীযুক্ত জগদিন্দ্রনাথ রায়, ‘মানসী সম্পাদক মহাশয় করকমলেষু মানসী যে সম্পাদকসংঘের হাত থেকে উদ্ধারলাভ করে। অতঃপর রাজ-আশ্ৰয় গ্ৰহণ করেছে, এতে আমি খুশি ; কেননা, এ দেশে পুরাকালে কী হত তা পুৱাতত্ত্ববিদেরা DDDL LSBDBD D BBDB D DDB BBDB BDDBBBDB BDBBDB DDB DD DBDBDS সে বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই। আমার খুশি হবার একটি বিশেষ কারণ এই যে- আমার জন্য মানসী যা করেছেন, অন্য কোনো পত্রিকা তা করেন নি। অপারে আমার লেখা ছাপান, মানসী আমার ছবিও ছাপিয়েছেন। লেখা নিজে লিখতে হয়, ছবি অন্যে তুলে নেয়। প্রথমটির জন্য নিজের পরিশ্রম চাই, ছবি সম্বন্ধে কষ্ট অপরের- যিনি আঁকেন ও যিনি দেখেন। তাই আপনি মানসীর সম্পাদকীয় ভার নেওয়াতে আমি ষোলো আনা খুশি হতুম, যদি আপনি ছাপাবার জন্য আমার কাছে লেখা না চেয়ে আলেখ্য চাইতেন। এর কারণ পূর্বেই উল্লেখ করেছি। রাজাজ্ঞা সৰ্বথা শিরোধাৰ্য হলেও সর্বদা পালন করা সম্ভব নয়। রাজার আদেশে মুখ বন্ধ করা সহজ, খোলা কঠিন। পৃথিবীতে সাহিত্য কেন, সকল ক্ষেত্রেই নিষেধ-মান্য-করা বিধি-অনুসরণ-করার চাইতে অনেক সহজসাধ্য। 'এর ওর হাতে জল খেয়ে না’- এই নিষেধ প্ৰতিপালন করেই ব্ৰাহ্মণজাতি আজও টিকে আছেন, বেদ-অধ্যয়নের বিধি পালন করতে বাধ্য হলে কবে মারা যেতেন। সে যাই হোক, এ কথা সত্য যে, আমার মতো লেখকের সাহায্যে সাহিত্য-জগতের কোনো কাজ কিংবা কাগজ সম্পাদন করা যায় না ; কেননা, আমি সরস্বতীর মন্দিরের পূজারী নই, স্বেচ্ছাসেবক। স্বেচ্ছাসেবার যতই কেন গুণ থাকুক-না, তার মহাদোষ এই যে, সে-সেবার উপর বারোমাস নির্ভর করা চলে না। আর মাসিকপত্রিকা নামে মাসিক হলেও, আসলে বারোমেসে। তা ছাড়া পত্রের প্রত্যাশায় কেউ শিমুলগাছের কাছে ঘোষে না ; এবং আমি যে সাহিত্য-উদ্যানের একটি শান্মলীতরু, তার প্রমাণ আমার গদ্যপদ্যেই পাওয়া যায়। লোকে বলে, আমার লেখার গায়ে কাটা, আর মাথায় মধুহীন গন্ধহীন ফুল। আর-একটি কথা। সম্প্রতি কোনো বিশেষ কারণে প্ৰতিদিন আমার কাছে শ্ৰীপঞ্চমী হয়ে উঠেছে ; মনে হয় কলম না ছোয়াটাই সরস্বতীপূজার প্রকৃষ্ট উপায়। এর কারণ নিয়ে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করছি।
পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৪
অবয়ব