সে রেগে বসে-বসে কেবলি বালি খুঁড়তে লাগল। এদিকে খোঁড়া ডাকছে—“বুড়ো-আংলা ভাই, এস লক্ষ্মীটি, আমায় বাঁচাও!”
“ধরা পড়ে এখন বাঁচাও!”—বলে রিদয় ছেলে-দুটোর সঙ্গে দৌড়ল। ছেলে-দুটো হাঁস নিয়ে একটা নালা পেরিয়ে চর ছেড়ে গ্রামে ঢুকল।
রিদয় আর তাদের দেখতে পেলে না। নালায় অনেক জল। রিদয় অনেকটা ঘুরে তবে একটা শুকনো-গাছের ডাল বেয়ে ওপারে উঠে, হাঁসকে খুঁজতে মাটির উপর ছেলেদের পায়ের চিহ্ন ধরে এগিয়ে চলল। একটা চৌমাথায় দেখা গেল, ছেলে-দুটো দুদিকে গেছে। কোন পথে যাওয়া যায়, রিদয় ভাবছে, এমন সময় বাঁকের রাস্তায় একটা হাঁসের পালক রয়েছে দেখে রিদয় বুঝলে, হাঁস এই পথে গেছে—পালক ফেলতে-ফেলতে, যাতে সে সন্ধান পায় সেই জন্যে।
রিদয় পালকের চিহ্ন ধরে দুটো মাঠ পেরিয়ে গ্রামের একটা সরু গলি পেলে। গলির মোড়ে একটা মন্দির। হাঁস কোথায় দেখা নেই, মন্দিরের খিলেনের উপরে লেখা—“হংসেশ্বরী!” আর তারি উপরে মাটির গড়া এক হাঁস। রিদয় রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে সেই দিকে চেয়ে আছে, এদিকে পিছনে প্রায় একশো লোক জমা হয়েছে—নাকে তিলক, কপালে ফোঁটা, নেড়া-মাথা বৈরিগীর দল! রিদয় যেমনি ফিরেছে অমনি সবাই মাটিতে দণ্ডবৎ হয়ে প্রণাম করে বললে—“জয় প্রভু বামনদেব, ঠাকুর, কৃপা কর!”
বামন কে, রিদয় তা জানত না, কিন্তু প্রণামের ঘটা দেখে সে বুঝলে, সবাই তাকে দেবতা ভেবেছে। রিদয় অমনি গম্ভীর হয়ে বললে—“তোমরা আমার হাঁস চুরি করেছ, এখনি এনে দাও। না হলে হংসেশ্বরীর কোপে পড়ে যাবে।”
সবাই মুখ-চাওয়াচাওয়ি করতে লাগল। তখন হংসেশ্বরীর পাণ্ডা গল-