মন শ্রদ্ধায় ভক্তিতে পূর্ণ হইল। তাঁহারা নবধর্ম্মে দীক্ষিত হইবার নিমিত্ত ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন।
অতঃপর একদিন সন্ধ্যার প্রাক্কালে ভগবান্ বুদ্ধদেব তাঁহার পাঁচজন শিষ্যকে লইয়া ঋষিপত্তনের অদূরবর্ত্তী এক হ্রদের তীরে গমন করিলেন। হ্রদের একপার্শ্বে উচ্চ-ঢিবি রহিয়াছে। ঐ ঢিবির নিম্নদেশ হইতে সোপান বাহিয়া জলাশয়ে নামিতে হয়। দীক্ষার্থী শিষ্যরা জলান্তে উপস্থিত হইলে বুদ্ধ কহিলেন—“বৎসগণ, তোমাদের আজিকার স্নান প্রতিদিনের স্নানের ন্যায় একান্ত সামান্য নহে, আজ তোমাদের কেবলমাত্র দেহের মলিনতা ধুইয়া ফেলিলে চলিবে না, আজ তোমাদের দেহের ও মনের সর্ব্বপ্রকার মলিনতা ধুইয়া-মুছিয়া অন্তরে বাহিরে পবিত্র হইতে হইবে।”
স্নান শেষ করিয়া শিষ্যেরা তীরে আসিলেন। বুদ্ধদেব জিজ্ঞাসা করিলেন—“বৎসগণ, তোমাদের অন্তর ও বাহির পবিত্র হইল কি?”
শিষ্যেরা উত্তর করিলেন “হাঁ”! তখন তিনি মধুরকণ্ঠে গম্ভীরভাবে বলিতে লাগিলেন— বৎসগণ, সাধারণতঃ তিন শ্রেণীর শিষ্য দেখা যায়। এক শ্রেণীর শিষ্যদিগকে অধোমুখ কুম্ভের সহিত তুলনা করা যায়। অধোমুখ কুম্ভ জলে নিমগ্ন হইয়াও ভরিয়া উঠে না, ইহাদের মনও তেমনি গুরুর উপদেশের প্রতি বিমুখ বলিয়া কস্মিন্ কালেও তাঁহার উপদেশামৃতে পূর্ণ হইয়া উঠে না। ইহারা যুগের পর যুগ গুরুর সহিত বাস করিয়াও কোন সুফল প্রত্যাশা করিতে পারে না। তোমরা কি এই শ্রেণীর শিষ্য হইতে চাও?” শিষ্যেরা উত্তর করিলেন—“না”। বুদ্ধ বলিতে লাগিলেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর শিষ্যদিগকে “উৎসঙ্গবদর” নাম দেওয়া যাইতে