অনাথপিণ্ডদ কিছুতেই নিরস্ত হইলেন না, তিনি উদ্যানখানি পাইবার নিমিত্ত ক্রমাগত আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করিতে লাগিলেন। রাজপুত্র জেত সুযোগ পাইয়া, একটা অসম্ভব মূল্য চাহিয়া থাকিবেন। প্রচলিত আখ্যানে বর্ণিত হইয়াছে যে তিনি কহিয়াছিলেন—“যদি উদ্যান সুবর্ণমুদ্রার দ্বারা আবৃত করিতে পারেন তাহা হইলেই আপনি সেই মূল্যদ্বারা উদ্যান পাইতে পরিবেন, অন্যথা আমি আপনাকে কিছুতেই উদ্যান দিব না।”
অনাথপিণ্ডদ রাজকুমারের এই প্রকার অসম্ভব আদেশ শুনিয়াও পশ্চাৎপদ হইলেন না। তাঁহার আদেশে ভাণ্ডারের দ্বার উন্মুক্ত হইল; পিতৃপিতামহের এবং তাঁহার আপনার আজন্মের সঞ্চিত অর্থরাশি শকটে বোঝাই করিয়া উদ্যানে আনীত হইতে লাগিল; স্বর্ণাস্তরণে উদ্যানের অৰ্দ্ধাংশ মণ্ডিত হইয়া ঝল্মল্ করিতে লাগিল। এই সংবাদ শ্রবণ করিয়া রাজকুমারের বিস্ময়ের সীমা রহিল না। তিনি উৰ্দ্ধশ্বাসে উদ্যানে উপস্থিত হইয়া মুদ্রা ছড়াইতে বারণ করিলেন। অনাথপিণ্ডদের ত্যাগের মহান্ দৃষ্টান্ত তাঁহার চিত্তে শুভবুদ্ধ জাগরিত করিল। তিনি কহিলেন—“এই উদ্যান আপনারই হইল কিন্তু চতুর্দ্দিকের আম্র ও চন্দন তরুরাজি আমারই রহিল, আমি এই সমুদায় বুদ্ধের চরণে অর্পণ করিয়া কৃতার্থ হইতে চাহি।”
অতঃপর অনাথপিণ্ডদ প্রভূত অর্থব্যয়ে বিহার নির্ম্মাণ করিলেন। রাজকুমার জেতও প্রাপ্ত অর্থ স্বয়ং গ্রহণ না করিয়া উক্ত অর্থে বিহারের চতুর্দ্দিকে চারিটি মনোহর অষ্টতল প্রাসাদ প্রস্তুত করিলেন।
বৌদ্ধসঙ্ঘকে এই বিহার উৎসর্গ করিবার নিমিত্ত অনাথপিণ্ডদ