পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VRV বৃহৎ বঙ্গ গোবিন্দদাস ও জীব গোস্বামী এই পুস্তক রচনার পূর্বে স্বৰ্গারোহণ করিয়াছিলেন । এই সকল চিঠিপত্রের ভাষা হয়ত কিছু রূপান্তরিত হইয়া থাকিবে, কিন্তু ইহাদের মূল ভাবের ব্যত্যয় হইবার সম্ভাবনা নাই। মুসলমানগণ এই ভাবের চিঠিপত্র অনেক রক্ষা করিয়াছেন। এদেশের বাদসহ আহমেদ শাহ ( ১৪০৯ খৃঃ) যখন জোয়ানপুরের রাজা ইব্রাহিমকর্তৃক আক্রান্ত হইয়া ভয়ে ভীত হইয়া তাইমুরের পুত্র সাহরুকের নিকট সাহায্যপ্রার্থ হন, তখন তাতার সম্রাটু জোয়ানপুরের বাদশাহকে যে চিঠি লিখিয়াছিলেন তাহা ষ্টুয়ার্ট সাহেবের ইতিহাসে ( ১৯১০), বঙ্গবাসী সংস্করণ, ১২০ পৃ: ) উদ্ধৃত হইয়াছে। সান্ন্যাল মহাশয় লিখিয়াছেন, নবকিশোরী বাদ্যসাহিকে ( যদু ) যে কোটা পাঠাইলেন। তন্মধ্যে একটি ভূৰ্জপত্রে লিখিত কয়েকটি শ্লোক লিখিয়া পঠাইয়াছিলেন। শ্লোক। অবশ্য বাঙ্গলায় এবং সান্ন্যাল মহাশয় তাহার সবগুলি দিতে পারেন নাই। তারকা চিহ্ন দিয়া পাদটীকায় লিখিয়াছেন, “মধ্যবৰ্ত্তী শ্লোকগুলি অপ্ৰাপ্য।” নবকিশোরীর পুত্র অনুপনারায়ণ। যাদু র্তাহার মাতা ও স্ত্রীর প্রতি যে নিৰ্ম্মমতা করিয়াছিলেন, তজ্জন্য চির অনুতপ্ত ছিলেন। তিনি নিজে গৌড়ের সিংহাসন অধিকার করিলেন, কিন্তু এই সময়ে একটাকিয়ার জমিদারির আয় তিনগুণ বাড়িয়া গেল, এই সকল ঘটনা ভাদুড়ী বংশের চিরস্মরণীয়। সুতরাং মূলতঃ বাদসাদ দিয়া এই সকল কাহিনীর যে অনেক কথাই সত্যমূলক তাহা আমরা বলিতে পারি। পৃথিবীর সর্বত্রই ইতিহাস লিখিত হইয়াছে, কিন্তু তাম্রশাসন ও মুদ্রায় যাহা নাই, তাহা যে ইতিহাস নহে, এবং বিজ্ঞানসঙ্গত বলিতে যে শুধু মুদ্রা ও তাম্রশাসন বুঝায়। এই অদ্ভুত কথা আমরা আধুনিক কয়েক জন বাঙ্গালী ঐতিহাসিকের মুখেই প্ৰথম শুনিয়াছি। একটাকিয়া বংশের প্রতাপ চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে বঙ্গদেশের ইতিহাসের মশালের আলো ; চলনবিলের স্বচ্ছ তোয়রাশি মুকুরের মত সম্মুখে রাখিয়া যে গভীর গড়খাই-বেষ্টিত রাজপ্ৰাসাদ এক সময়ে শক্রির অনধিগম্য ছিল, যে একটাকিয়া বংশের গৌরবের জন্য হিন্দু-মুসলমান একত্র হইয়া লড়াই করিয়াছে এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতেও যে রাজকুলের জন্য পাঠান সেনাপতি কামতার খাঁ প্ৰাণপাত করিয়া সেই সুচিরাগত রাজভক্তির সংস্কার উজ্জল করিয়া গিয়াছিলেন, যেখানে ১২ মাসে ১৩ পাৰ্ব্বণে উৎসবের শত শত দীপ জ্বলিয়া উঠিত, যেখানে ব্ৰাহ্মণগণ পুথি ফেলিয়া একটু হইলেই তরবারি হস্তে সমর্যাঙ্গনে নামিতেন, সেই বঙ্গের শেষ গৌরবরশ্মি একটাকিয়া আজ কোন অস্তাচলে মিলাইয়া গিয়াছে ! যদুসম্বন্ধে কেহ কেহ বলেন, তিনি গণেশের এক মুসলমানী উপস্ত্রীর গর্ভসস্তৃত জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন, সুতরাং তিনি মুসলমান হইয়াছিলেন। কেহ আবার বলেন, তিনি বে উল আলাম নামক কোন মুসলমান সাধুৱ চৰ্ব্বিত পান श६ cकत्र भूगणांन शंग्टन? জাতিচু্যুত হইয়াছিলেন। কেহ কেহ বলেন, তিনি আসমানতার নামক কোন মুসলমান মহিলার প্ৰেমে পড়িয়া মুসলমানধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করেন। গণেশ কোন পাঠান ওমরাহের সম্পত্তি হরণ করেন নাই, পরন্তু অনেক মুসলমান বিদ্বান ও সাধু ব্যক্তিদিগকে বৃত্তি দান করিতেন, এতৎ সত্ত্বেও কতকগুলি যড়যন্ত্রকারী মুসলমানের