পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓሕ8 বৃহৎ বঙ্গ বঙ্গেয় যে সকল জমিদার ও রাজা প্রতাপাদিত্যের (“ভয়ে যত নৃপতি দ্বারস্থ” ) দরবারে গরুড় পক্ষীর ন্যায় থাকিতেন, তাহাদিগকে হস্তগত করিতে চেষ্টা করিলেন। প্ৰতাপের নিজ সেনাপতিদের মধ্যেও কাহাকে কাহাকে উৎকোচ দিয়া বশীভুত করিতে চেষ্টা করিলেন। বাঙ্গালীসমাজ তখনও প্ৰায় এখনকার সমাজের মতই ছিল । কোন সাধারণ শক্রির বিরুদ্ধে একত্ৰ হইবার প্রবৃত্তি তাহদের ছিল না । কেহ কেহ প্ৰতাপাদিত্যের শ্রেষ্ঠত্বে ঈর্ষ্যান্বিত ছিলেন ; কেহবা মোগলেব অনুগ্রহপ্ৰাথী ছিলেন, কেহবা প্রতাপাদিত্য-কৃত পিতৃব্য ও তৎপুত্রের হত্যা, কার্ভালোর হত্যা, স্বীয় জামাতাকে হত্যা করিবার চেষ্টা ইত্যাদি দুনীতি ও পাপ খুব বাড়াইয়া বৰ্ণনা করিতে লাগিলেন। তিনি যে হিন্দুরাজ্য স্থাপন করিতে চাহিয়াছিলেন, কোন হিন্দুরাজা তাহা বুঝিলেন না, তাহার দানশীলতা ও উদারতার কথা কেহ বলিলেন না, তাহাকে খর্ব করিতে পারিলেই তাহদের মনস্কামনা সিদ্ধ হইল মনে কবিলেন । সুতরাং রূপরাম ও কচু রায়কে সঙ্গে করিয়া ২২ লস্কর সঙ্গে যে দিন মানসিংহ বঙ্গে পদার্পণ করিলেন—সেদিন বাঙ্গলাদেশে তিনি সহায়তার অভাব অনুভব করিলেন ; যদিও কিছু ঐক্যের গুড়া বঙ্গদেশে তখনও ছিল, তাহা মানসিংহের ন্যায় রাষ্ট্রনৈতিক খেলোয়াড়ের ভেদনীতিতে সাম্যক বিধ্বস্ত হইয়া গেল । (১) কৃষ্ণনগবের রাজাদের পূর্বপুৰুষ ভবানন্দ মজুমদার মানসিংহকে বিশেষ সাহায্য করেন। ঝড়বৃষ্টি ও বন্যার প্রকোপে যখন মানসিংহের সৈন্যদল মৃত্যুদ্ধারে উপস্থিত হইয়াছিল—তখন তিনি রসদ জোগাইয়া তাহদের প্রাণ রক্ষা করেন এবং প্রতাপাদিত্যের সম্বন্ধে অনেক সন্ধান দেন । তঁহার গৃহদেবতা গোবিন্দ ও লক্ষ্মীব মহাসমাবোহে বিবাহ দিবার জন্য তিনি বিপুল আয়োজন করিয়াছিলেন, সেই উপকরণে মোগল সেনাদের মহা-বিপদ ঘুচিল। ভবানন্দ মজুমদার নিশ্চয়ই ভুলিযা গিয়াছিলেন যে তিনি বহুদিন যশোরে প্রতাপাদিত্যের অনুগৃহীত হইয়া ছিলেন। (২) চাঁচড়ার রাজবংশের পূর্বপুরুষ ভবেশ্বর রায়ের বংশধর মহাতাব রায় বা মুকুট রায় যশোর রাজ্যের উত্তর সীমান্তের প্রধান কিল্লাদার এবং প্রতাপাদিত্যের অন্যতম প্ৰধান কৰ্ম্মচারী ছিলেন। তিনি মানসিংহকে গোপনে রসদ ও সৈন্য পাঠাইয়াছিলেন । (৩) নলডাঙ্গার রাজবংশের পূর্বপুরুষ রণবীর খ্যা এবং কুশদহের জমিদাবী রাঘব সিদ্ধান্ত বাগীশ উভয়ে মানসিংহের সহায়তা করিয়াছিলেন। সিদ্ধান্তবাগীশ মানসিংহের দরবারে বিশেষরূপে সন্মানিত হইয়াছিলেন । (৪) কামদেব ব্ৰহ্মচারীর পুত্ৰ লক্ষ্মীকান্ত প্ৰতাপের বিশেষ অনুগৃহীতদের অন্যতম। কেহ কেহ বলেন, রূপরাম বসুব কৌশলে গুপ্তভাবে কামদেবের লিখিত পত্র প্রেরিত হয় এবং মানসিংহ যশোহরের সমীপবৰ্ত্তী হইলে লক্ষ্মীকান্ত গোপনে আসিয়া তাহার সহিত যোগ দেন। শুধু যোগ দেওয়া নহে যুদ্ধের প্রাক্কাল পৰ্যন্ত প্ৰতাপ কি ভাবে আয়োজনাদি করিয়াছিলেন, লক্ষ্মীকান্ত সে সকল গুপ্ত সন্ধান ব্যক্ত করিয়াছেন-তন্দ্বারা মোগল সৈন্যের डौयमद्भक क्षम ।