পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏԳNշ বৃহৎ বঙ্গ ভাষাগুলি ঘূণ্য বলিয়া কোন ভদ্র রচনার গন্তীতে স্থান পাইল না। (৪) দেবভাষা সংস্কৃতের প্রভাব অশেষরূপে বৃদ্ধি পাইল। (৫) ব্ৰাহ্মণগণ সমাজের শীর্ষস্থানে দাড়াইয়া ঘোষণা করিলেন—তাহারাই সমাজের একমাত্র আরাধ্য—অপরাপর জাতি পতিত শূদ্ৰ। ক্ষত্ৰিয় বৈপ্তের কোন প্রকার প্রাধান্য স্বীকৃত হইল না। কলিতে ব্ৰাহ্মণ আর শূদ্র ছাড়া অন্য কোন জাতি নাই ; ইহাই তাহারা প্রচার করিলেন। ভক্তিই একমাত্ৰ লক্ষ্য ; জ্ঞান ও কৰ্ম্মের অধিকার লোপ পাইল। কৰ্ম্মের মধ্যে ব্ৰাহ্মণকে দান ও ব্রাহ্মণকে পূজা করাই শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্ম। এককালে দ্বৈপায়ন ব্যাস ব্ৰাহ্মণকে কোন তিথিতে কি দান করিলে কি ফল হয়, তাহা লিখিয়া গিয়াছিলেন (৪৮ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)-সেই লেখাটাই বঙ্গীয় সমাজের অনুশাসনরূপে বদ্ধমূল হইল। ব্ৰাহ্মণবেষ্টিত রাজ-সভায় এই সংস্কৃতের প্রতি প্ৰগাঢ় অনুরাগের ক্ষেত্রে বাঙ্গলা ভাষার কোন ভরসা ছিল না। পল্লীর কোকিলের কণ্ঠ অবশ্য থামে নাই, এবং দূর ময়মনসিংহ, শ্ৰীহট্ট, গাড়োদেশ প্রভৃতি যে যে স্থান সেন-রাজাদের অধিকৃত হয় নাই, সেখানে হিন্দুদিগের প্রাচীন আদর্শ বৌদ্ধ-কৰ্ম্মবাদে পুষ্ট হইয়া পল্লীগাথায় গুপ্ত যুগের সৌন্দৰ্য্যবোধ ও পূৰ্বরাগের লীলাখেলা দেখাইতে লাগিল, ব্ৰাহ্মণ্য-প্রভাব সে সকল দেশে প্ৰবেশ করিতে পারে নাই। পূৰ্ব্ব-ময়মনসিংহ-যে স্থান হইতে সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট পল্লীগাথাগুলি পাওয়া গিয়াছে—তাহা বহুযুদ্ধে সেন-রাজগণের হাত হইতে স্বীয় স্বাধীনতা বঁাচাইয়া রাখিয়াছিল। এক সময়ে সমস্ত বঙ্গদেশ এই গাথা-সাহিত্য লইয়া বিভোর ছিল, কিন্তু এবার সেন-রাজগণের যুগে সেই গাথা-সাহিত্যের উপর পাটক্ষেপ হইল। গাথার কবিগণ সেন-রাজগণের কীৰ্ত্তি কেনই বা গান করিবেন ? তাই মহীপাল, রাজ্যপাল, ধৰ্ম্মপাল, রামপাল, যোগীপাল প্ৰভৃতি পালরাজন্তবর্গ সম্বন্ধে যাহারা গান বঁাধিয়াছিলেন, তঁহাদের বংশধরগণ হেমন্ত সেন, বিজয় সেন, বল্লাল সেন, লক্ষ্মণ সেন, কেশব সেন, বিশ্বরূপ সেন বা সুর সেন সম্বন্ধে একটি গাথাও রচনা করিয়াছেন বলিয়া উল্লেখ নাই। অথচ তাহদের পরে ত্রিপুরার রাজা অমরমাণিক্য, ধন্যমাণিক্য ও রাজ্ঞী কমলা দেবী সম্বন্ধীয় বহু গাথার উল্লেখ আছে-এদিকে ঈশা খা, মনুর খ, ফিরোজ খাঁ প্ৰভৃতি বহু মুসলমান নবাব-বাদসহ-সম্বন্ধীয় পল্লীগাথা আমরা পাইয়াছি। সেনা-রাজগণ ব্ৰাহ্মণদিগের মত অবলম্বন করিয়া পল্পী ভাষার কোন উৎসাহ দেন নাই। বিশেষ কৰ্ম্ম-গৌরব অস্বীকৃত হওয়াতে মানুষের বীরত্ব, শৌৰ্য, জ্ঞান, এ সমস্ত উপেক্ষার বিষয় হইয়া পড়িল। ইহারা অঙ্গীকার করিয়া বসিলেন, মানবের কীৰ্ত্তিকথা লইয়া কোন কাব্যরচনা পণ্ডশ্রম মাত্ৰ-বিশেষ, ঘৃণ্য কথিত ভাষায় । এই জন্য নরলীলাস্থলে দেবীলীলার বর্ণনাই কবি ও অপরাপর লেখকগণের লক্ষ্য হইল। আমরা এইভাবে মালঞ্চমালা, কাজলরেখা, কাঞ্চনমালা প্ৰভৃতি আদর্শ-রমণীর কথা হারাইলাম,-পাইলাম ধ্রুবের উপাখ্যান, প্ৰহ্নলাম্বের কৃষ্ণগ্ৰীতি ও দেব-বীৰ্য্যে উৎপন্ন পাণ্ডবাদিব কথা, ভগবানের অবতার রামের লীলা ও কৃষ্ণসম্বন্ধীয় শত শত কাহিনী । পল্লীগাথার স্থানে পাইলাম। কথকতা, গীতিকথার স্থলে পাইলাম কীৰ্ত্তন। আমরা হারিয়াছি কি জিতিয়াছি--তাহার বিচারস্থল এখানে নহে। खाँवi-eचitब एप्रॉजर्नब्र 邵*忙羽 1