পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচন্দ্র ও তৎপরবর্তী যুগে বাঙ্গলা-সাহিত্যের অবস্থা SeSS গীত নাই।” একথারও অলীকত্ব তিনি প্রমাণ করিয়াছেন। • তাহার গানগুলি প্রায়ই অতি সংক্ষিপ্ত, সেই স্বল্পাক্ষর গীতিকার প্রত্যেকটিই একটি সমগ্ৰ ভাব প্ৰকাশ করে। সেই ক্ষুদ্র গীতিগুলি বিয়োগান্ত করুণা ও স্বতঃসিদ্ধ কবিতায় সার্থক হইয়াছে। “ভালবাসবে বলি ভাল বাসিনে, আমার স্বভাব এই তোমা বই আর জানিনে। বিধুমুখে মধুর হাসি, আমি বড় ভালবাসি, তাই দেখে যেতে আসি-দেখা দিতে আসিনে” • গানটি সৰ্ব্বজন-বিদিত। [ ইহাতে প্রেমের “স্বভাব” বাণিত হইয়াছে—সে স্বভাব এই যে তাহা দিতে চায়-নিতে চায় না । ] “যার মন তারই কাছে, লোকে বলে নিলে নিলে, দেখা হ’লে জিজ্ঞাসিব, সে নিলে কি আমায় দিলে । দৈবযোগে একদিন, হয়েছিল দরশন। না হ’তে প্ৰেম-মিলন, লোকে কলঙ্ক রটালে।” [ ইহার অর্থ, সে আমাকে ভালবাসে নাই, বরং আমিই তাহাকে ভালবাসিয়াছি, সে আমাকে কিছুই দেয় নাই, বরং সেই নিয়াছে; তথাপিলোকে রটাইতেছে যে আমি তাহার মন নিয়াছি-একথা সত্য নহে, তাহার মন তাহারই আছে। ] আর একটি গান “প্রেমে কি সুখ হ’ত । আমি যারে ভাল বাসি, সে যদি ভালবাসিত। কিংশুক শোভিত। ভ্রাণে, কেতকী কণ্টক বিনে, ফুল হ’ত চন্দনে ইক্ষুতে ফল ফলিত।” কবির এই সিদ্ধান্ত কি ঠিক ? সত্যই কি জগতে ভালবাসার প্রতিদান পাওয়া যায় না, তাহা কি পলাশের সুগন্ধের মত, কঁাটাহীন কেয়ার মত, চন্দন তরুর ফুল ও ইক্ষুর ফলের মত দুর্লভ ও অসম্ভব ? সত্যই কি যাহাকে যে ভালবাসে-সমস্ত প্ৰাণমন দিয়া ভালবাসে, – সে সেই অতিরিক্ত উচ্ছাস দেখিয়াই সরিয়া পড়ে—একজনের অতিরিক্ত আগ্রহে কি অপরের আগ্রহ জুড়াইয়া যায় ? DBD DBDBB DD DBBDB S DBBBDBDSDBB DBBDBB DBDBD DDD SS LBDD DDD করিয়া বঞ্চিত হন। যে নৈবেদ্য একমাত্র ভগবানকে দেয়, তাহা যাহাকে তাহাকে দিলে এবংবিধ বিড়ম্বনাই ঘটে। নিধুবাবু আর একটি গানে বলিয়াছেন -“সে এত নিষ্ঠুর, তোমার প্রতি করুণার বিন্দু তাহার নাই—তবু তুমি তাহাকে এত ভালবাস কেন?” একটি ছত্রে প্ৰেমিক এই প্রশ্নের উত্তর দিয়াছেন,-“তবু যে কেন ভালবাসি, তাহা নিজেই জানি না।” কিন্তু কবি এই প্রশ্নের উত্তর অন্য এক গানে স্বয়ং দিয়াছেন, “আমার স্বভাব এই, তোমা বই আর জানিনে।” ইহাই প্রেমের স্বভাব। নিধুবাবুর প্রধান ভক্ত ছিলেন ভগিনী নিবেদিতা (Miss Margaret Noble); froffeC5, 26 fGS নিধুবাবুর তুল্য কবি আর নাই। বাঙ্গলা গদ্যসাহিত্যের উল্লেখ নিম্প্রয়োজন। যতদূর দেখা যায়-পূর্ববঙ্গে ত্রিপুরা ও আসামের রাজারা প্ৰাচীনকাল হইতে রাজদরবারে বাঙ্গলা ভাষাকে গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। ত্রিপুরার রাজাদের তিন চারিশত বৎসর পূর্বের কোন কোন তাম্রশাসন আমরা বাঙ্গলায় লিখিত দেখিয়াছি; তদ্রুপ একখানি তাম্রশাসন আমার নিকটই ছিল, স্বৰ্গীয় কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ মহাশয় তাহা আমার নিকট হইতে লইয়া গিয়া আর ফিরাইয়া দেন নাই। বঙ্গভাষা

  • এই গানটি কেহ কেহ শ্ৰীধর পাঠকের রচিত বলিয়া মনে করেন, কিন্তু তাহা তুল।