পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয় কর্তৃক লঙ্কা অধিকার b”፩S ছাড়া আর কিছুই নহে। এই সমস্ত হইতে এবং গুজরাট, জাভা, বিশেষ করিয়া সিংহলী ইতিহাস হইতে, বৃহৎ বঙ্গের অনেক মূল্যবান তত্ত্ব আবিষ্কৃত হইতে পারে। আমরা গুজরাট ও মধ্যভারতে বঙ্গীয় উপনিবেশের কথা বলিয়াছি। এইবার শ্ৰীযুক্ত জগদীশ্বরমের প্রবন্ধ হইতে বাঙ্গালীর প্রাচীন বিস্তৃত উপনিবেশ-চেষ্টার আরও কিছু সমৰ্থন পাওয়া গেল। পূৰ্ব্বভারতীয় দ্বীপমালা, চীন, শ্যাম, জাপান প্ৰভৃতি বহুস্থানে স্মরণাতীত কালের চিহ্নগুলি এখন বঙ্গের ইতিহাস-লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে লুক্কায়িত আছে । আশাচৰ্য্যের বিষয়, ভারতবর্ষ ও বঙ্গদেশের ইতিহাস শিখিবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বহুব্যয় স্বীকার করিয়া দলে দলে ছাত্ৰগণ ইংলেণ্ডে প্রেরণ করেন, সেখানে তাহার। এ দেশের পুরাতত্ত্ব শিক্ষার পর কখনও কখনও জাৰ্ম্মেনী ও প্যারীতে যাইয়া পাঠ সাঙ্গ করিয়া উপাধি লইয়া আসেন। ভারতের পুরাতত্ত্বের খনি বাড়ীর কাছে, তাহার সন্ধান লওয়াও অপেক্ষাকৃত অল্প ব্যয়-সাধ্য। কিন্তু তাঁহাই খোজ করিতে আমরা দেশ-বিদেশে ঘুরিয়া বেড়াই এবং আমাদের বিলাতের গুরুগণ যতটুকু দিয়াছেন—তাহার বেশী অগ্রসর হইতে ভয় পাই, যেহেতু পাছে তঁহাদের সঙ্গে মতান্তর হয় এবং ডিগ্ৰিলাভ না ঘটে । পরাধীন ভারতবর্ষের অধিবাসীদের লইয়া নিয়তি কতরূপই বিদ্রুপ ও রহস্যের খেলা খেলিতেছেন, তাহার জন্য দুঃখ করিলে কি হইবে ? বিজয়ের মৃত্যুর পর পাণ্ডুবাম্মদেব সিংহলের রাজা হন । ইহার পর তৎপুত্ৰ অভয় এবং অভয়ের মৃত্যুর পর তাহার ভাগিনেয় পাণ্ডুকাভিয় ৭০ বৎসর সিংহলের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। পাণ্ডুকাভিয়ের পুত্র মুতাশিব ৬০ বৎসর রাজত্ব করেন, মুতাশিবের মৃত্যুর পর তঁহার দ্বিতীয় পুত্র তিন্ন সিংহলের রাজা হন। তাহার রাজত্বকালে খৃঃ পূঃ ৩-৯ অব্দে অশোকের পুত্র, বিদিশার ( বর্তমান ভিলসার নিকটবৰ্ত্তী বেশ নগরীর) দেবী নামিকা মহিষীর গৰ্ভজাত মহেন্দ্র এবং তঁহার কন্যা সঙ্ঘমিত্র ধৰ্ম্মের সুসমাচার প্রচারার্থ সিংহলে আগমন করেন। হিউনসাঙ ইহাদিগকে অশোকের কনিষ্ঠ ভ্রাতা-ভগিনী বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন, কিন্তু সিংহলীদের ইতিবৃত্ত-অনুসারে ইহারা অশোকের পুত্ৰ-কন্যা। মহারাজ তিয় যুবরাজ মহেঞ্জের কাষায়-বস্ত্র-পরিহিত প্ৰতিভাপূর্ণ দীপ্ত মুঞ্জি দেখিয়া বিশেষ শ্ৰদ্ধাসহকারে স্বতঃই তাহাকে প্ৰণাম করিয়া জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন,-“ভারতবর্ষে এরূপ বেশধারী কতজন আছেন?” মহেন্দ্ৰ বলিলেন, “গৈরিক বসনে ভারতবর্ষ সমাচ্ছন্ন ও সমুজ্জ্বল, তথায় বুদ্ধশিষ্যের সংখ্যা অগণিত।” > R