পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ । জয়া ভাবিতে লাগিলেন, “ভগবান। দয়াময়, তবে অবলার প্রতি তিনি নিষ্কারুণ কেন? শুধু কি কঁদিবার জন্যই রমণীজীবন সৃষ্ট হইয়াছিল ? হে দয়াল, হে অনাথানুথি, একটিবারও কি দাসীকে তাহার হৃদয়সৰ্বস্বকে দেখিতে দিবে না ? আর পরীক্ষা করিও না, নাথ ! এই নিরাশ্য-হৃদয়ে একবার আশা দাও, বল দাও, মৰ্ম্মের মাঝারে একবার বলিয়া যাও, তঁহাকে দেখিতে পাইব ।” পতিবিরহে জয়া আহার নিদ্রা একরূপ ত্যাগ করিয়াছেন। না খাইলে নয়, আশ্রয়দাতা চণ্ডী প্ৰসাদের স্ত্রী সুনন্দ কিছুতেই ছাড়েন না, তাই একটা কিছু সিদ্ধপোড়া রাধিয়া খাইতে বসিতে হয়। জয় না খাইলে সুনন্দ খাইতে চান না। অগত্যা পীড়ার ভাণ করিয়া জয়া অৰ্দ্ধাশন ও প্ৰায়োপবেশনে দিন কাটাইতে লাগিলেন । একে নিয়ত বিমলার জন্য দুশ্চিন্তা ও পতিবিরহক্লেশ, তদুপরি অনাহার। জয়া সত্যই অত্যন্ত রুগ্না হইয়া পড়িলেন। চণ্ডী প্ৰসাদ কবিরাজ ডাকাইলেন। বৈদ্য পাচন ও বড়ির ব্যবস্থা করিয়া গেলেন। রোগিণী তাহার কিছুই গলাধঃকরণ করিলেন না । সুনন্দ ঔষধ খাইতে জিদ করিলে জয়া বলিতেন, “মা, আমার প্ৰাণের ভিতর যে ঘা হইয়াছে তাহ পাচন ও বড়িতে সারিবে না। তোমরা কেন অনর্থক অর্থ অপব্যয় কর ? তুমি রমণী, আমার অন্তঃস্থল দর্পণের মত দেখিতে পাইতেছ। তবে কেন এ বিষয়ে ਜੇ ਲੁਜੇ ' ক্ৰমে বিনা চিকিৎসায়, অনশনে ও দুর্ভাবনায় জয়ার শরীর অত্যন্ত কৃশ ও দুর্বল হইল, পীড়া কঠিন হইয়া দাড়াইল । @°